যৌতুক না দেওয়ায় কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে স্ত্রী পলি আক্তারকে হত্যার অপরাধে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া স্বামী ফারুক সিকদারের সাজা পাল্টে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে হাইকোর্ট।
আসামির জেল আপিল নিষ্পত্তি করে বুধবার বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম খন্দকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমেদ হিরো।
রায়ের পরে সাইফুল বলেন, ‘এ মামলায় এক মাত্র প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিল বাড়ির মালিক। কিন্তু তিনি যখন তার সাক্ষ্য দিয়েছেন, তখন তিনি বলেননি ফারুক সিকদার স্ত্রীর গায়ে আগুন দিয়েছেন। তাছাড়া যে দুজন চিকিৎসক পলি আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন এবং তার বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেছিলেন তারা তখন ডিউটিতে ছিলেন না। এসব বিষয় বিবেচনায় আদালত আসামি ফারুকের সাজা মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছে।’
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমেদ হিরো বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে নোট দেয়া হয়েছে।
আসামি ফারুক সিকদারের বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুর থানার ছাইলাবুনিয়া গ্রামে। ২০১১ সালে গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার চণ্ডলতা গ্রামের সুরুজ মিয়ার মেয়ে পলি আক্তারকে বিয়ে করেন ফারুক। তারা রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
ফারুক সিকদার বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুক চেয়ে স্ত্রীকে মারধর করতেন। যৌতুক না দেয়ায় ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ তিনি তার স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক পলি আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পলির বাবা সুরুজ মিয়া খিলগাঁও থানায় মামলা করেন।
ঘটনার সময় পলি আক্তারের চার মাসের একটি পুত্রসন্তান ছিল। সেই সন্তানও পরে মারা যায়।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২০১৪ সালের ১৭ মার্চ ফারুক সিকদারকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
২০১৬ সালের ১৫ জুন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক সালেহ উদ্দিন আহমদ রায় ঘোষণা করেন। তিনি ফারুকের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন। পরে মামলাটি হাইকোর্টে আসে।