চুয়াডাঙ্গায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার আড়াই মাস বয়সী সন্তানকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আটক করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে।
শিশুর মা মিতালী খাতুনের অভিযোগ, বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এই সন্তান তার গর্ভে আসে বলে সন্দেহ করতেন স্বামী ইখলাছ উদ্দিন। এ নিয়ে কলহের জেরে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে শিশুটিকে হত্যা করেন ইখলাছ।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মাঝেরপাড়ায় বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম শিশুর মৃত্যু ও ইখলাছকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত শিশুর নাম ইকবাল হোসেন। সে ইখলাছ ও মিতালীর প্রথম সন্তান। তাদের দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। মাঝেরপাড়ায় তারা ভাড়া বাসায় থাকেন। তাদের গ্রামের বাড়ি আলমডাঙ্গা উপজেলা আঠারোখাদা গ্রামে।
মিতালী খাতুন বলেন, ‘আমার অন্য এক জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। পারিবারিক কলহের কারণে বিয়েবিচ্ছেদ হয়। প্রথম স্ত্রীর কোনো সন্তান না হওয়ায় তাকে ছেড়ে চার বছর আগে ইখলাছ আমাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই সে আমাকে সন্দেহ (বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে) করতে থাকে। আড়াই মাস আগে আমাদের ছেলে হয়। ওই ছেলে তার নয় বলে জানায় ইখলাছ।
‘আজ সকালে রান্নাঘরে কাজ করছিলাম। হঠাৎ আমার সুস্থ ছেলের কান্না শুনি। গিয়ে দেখি আমার ছেলের বাম পা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। ইখলাছ আমাকে বলে যে টিকা দেয়ার জায়গা থেকে রক্ত বের হচ্ছে। বাচ্চাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ডাক্তার জানায় যে টিকার জায়গা থেকে কোনো রক্ত বের হয়নি। ছেলের বাম পায়ে অন্য জায়গায় একটা ইনজেকশন পুশ করার চিহ্ন আছে। সেখানে ফুলে গেছে। আমার ছেলেকে বিষ মেশানো ইনজেকশন পুশ করে হত্যা করা হয়েছে।’
মিতালী জানান, শিশু ইকবালকে প্রথমে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসক। সেখানে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে মরদেহ নিয়ে তারা গ্রামের বাড়ি আঠারোখাদায় নিয়ে যান।
সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মাহবুবুর রহমান মিলন প্রথমে অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে দেখেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুপুরে শিশুটিকে আমার কাছে নিয়ে আসা হয়। তখন শিশুটির অবস্থা খারাপ ছিল, খিঁচুনি হচ্ছিল। তার মা বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করার অভিযোগ করছিলেন।
‘শিশুটির বাম পায়ে একাধিক ইনজেকশন পুশের চিহ্ন ছিল। শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিক্যালে রেফার্ড করি। তবে কোন ইনজেকশন দেয়া হয়েছে তা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। বেঁচে থাকলে রক্ত পরীক্ষা করে বলা যেত। তার আগেই তো শিশুটি মারা গেল।’
আলমডাঙ্গা থানার ওসি সাইফুল জানান, সন্ধ্যায় খবর পেয়ে ওই গ্রামে গিয়ে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইখলাছকে আটক করে থানায় নেয়া হয়।