বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাহাড়ে বালুখেকোদের দৌরাত্ম্য, টার্গেট কৃষিজমি

  •    
  • ৩০ মার্চ, ২০২২ ১৩:২৪

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষায় প্রশাসনের নজর রয়েছে। অবৈধ বালুমহালের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। একই সঙ্গে পাহাড় ও কৃষিজমির মাটি কাটাসহ অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে।’

খাগড়াছড়িতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বালুমহাল সিন্ডিকেট। স্থানীয় প্রশাসন মাত্র ৫টি বৈধ বালুমহাল ইজারা দিলেও প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় অবৈধভাবে অর্ধশতাধিক চলার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী, ছড়া ও কৃষিজমি থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এলাকার কৃষি জমিগুলো তাদের কবলে বেশি পড়ছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই।

এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ বলছেন সুধীসমাজও।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়ি সদরে ১টি, মানিকছড়িতে ১টি, দীঘিনালায় ১টি ও রামগড়ে ২টি বালুমহাল ইজারা দেয়া হয়েছে।

তবে এ সংখ্যার ১০ গুণের বেশি বালুমহাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানায়।

সরেজমিনে রামগড়ের লামকুপাড়া ও থানা চন্দ্রপাড়া ঘুরে দেখা যায়, কৃষিজমির উপরিভাগে বড় বড় গর্ত করে গভীর থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

প্রতিদিন এসব বালু যাচ্ছে পাশের ফেনী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় এবং অবকাঠামো নির্মাণকাজে। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পরিবেশের ক্ষতি করে শত শত গাড়ি বালু পাচার হচ্ছে সেখানে।

একই চিত্র জেলা শহরেও। চেঙ্গী নদীতে মাত্র একটি বালুমহাল ইজারা দেয়া থাকলেও ১০ থেকে ১২টি স্থানে চলছে বালু উত্তোলন। এ কাজে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ এনে স্থানীয়রা জানান, এর প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা।

অবৈধভাবে তোলা বালু সন্ধ্যার পর থেকে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয় ফেনী ও চট্টগ্রামে। ছবি: নিউজবাংলা

খাগড়াছড়ির অপর্ণা চৌধুরীপাড়ার সাথোয়াই মারমা জানান, কয়েক দশক ধরে বর্ষাকালে চেঙ্গীর ভাঙনে ঘর-বাড়ি ও কৃষিজমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এরপরও ডিসি অফিস থেকে অনুমোদন নিয়ে প্রতিদিনই ৪ থেকে ৫টির মতো ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে।

এ ছাড়া নদীতে পানি কমে যাওয়ায় পাড় ভেঙে গর্ত করে মেশিনের পাইপ দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে।

ঠাকুরছড়া এলাকার বাসিন্দা চারু বিকাশ ত্রিপুরা জানান, বালু পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক্টরের উৎপাতে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ। ধুলাবালি ও মেশিনের শব্দে স্বাভাবিক জীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব কাজে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা জড়িত, তাই কেউ প্রতিবাদ করেন না।

রামগড় থানার চন্দ্রপাড়ার মিলন ত্রিপুরা জানান, এলাকায় কয়েকজন এসে জমিতে পুকুর করে দেয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছে। অনেকের জমিতে পাইলিং টেস্ট করা হচ্ছে।

যেসব জমিতে পানির সঙ্গে বালু বের হচ্ছে তারা মালিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। এরপর পাম্প (ড্রেজার) দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে গাড়ি এসে বালু নিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে রামগড় উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম বলেন, ‘রামগড় স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের নামে একটি মহল এসব কাজ করছে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জনপ্রতিনিধিরা ইন্ধন দিচ্ছে।

‘প্রতিদিন শত শত গাড়ি বালু জেলার বাহিরে যাচ্ছে। দ্রুত এ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ রইল।’

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষায় প্রশাসনের নজর রয়েছে। অবৈধ বালুমহালের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। একই সঙ্গে পাহাড় ও কৃষিজমির মাটি কাটাসহ অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে।’

এ বিভাগের আরো খবর