বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ক্যাপিটাল মার্কেটের (বিআইসিএম) রিসার্চ সেমিনার-১১ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিআইসিএম মাল্টিপারপাস হলে সম্প্রতি এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় বলে মঙ্গলবার ইনস্টিটিউটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সেমিনারে ‘ইসলামিক ফাইন্যান্স, এথিক্যাল ফাইন্যান্স এবং ইউএন এসডিজির মধ্যে সমন্বয়’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন মালয়েশিয়ার অ্যাডল অ্যাডভাইজরির প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও মুফতি ইউসুফ সুলতান।
ইনস্টিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর এডুকেশন ইন ইসলামিক ফাইন্যান্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আইশা মুনিজা, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ক্যাপিটাল মার্কেট রেগুলেটরি রিফর্মস অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স (সিএমআরআরসি) বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এসকে মো. লুৎফুল কবির, বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির মহাব্যবস্থাপক মো. গোলজারে নবী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই অর্থায়ন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক ইশরাত-ই-মওলা।
সঞ্চালনা করেন বিআইসিএমের পরিচালক (স্টাডিজ) ওয়াজিদ হাসান শাহ্ ।
গবেষণায় তুলে ধরা হয়, ইসলামিক ফাইন্যান্স নৈতিক মূল্যবোধ, ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা ও বৃহত্তর সামাজিক কল্যাণের পথ প্রশস্ত করে। এথিক্যাল ফাইন্যান্স, ইএসজি ও ইউএন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অধিকাংশ মূল্যবোধ আরও সমৃদ্ধভাবে প্রচার করে ইসলামিক ফাইন্যান্স ।
সাধারণ মানুষ, পরিবেশ এবং পৃথিবীর কল্যাণে ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে নীতিনির্ধারকদের আরও ভাল সিদ্ধান্ত নিতে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয়েছে এই উপস্থাপনায়।
বিআইসিএম মাল্টিপারপাস হলে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ফাইনান্সিয়াল ইন্সট্রুমেন্টস নকশা বা পরিকল্পনা করার সময় মূল্যবোধভিত্তিক ইসলামিক ফাইন্যান্সের কথা বিবেচনা করতে নীতিনির্ধারকদের কাছে প্রত্যাশা করা হয়।
আলোচনায় ড. আইশা মুনিজা ব্যাংক নেগারা মালয়েশিয়ার উদাহরণ টেনে সোশ্যাল রিটার্ন বেশি এমন প্রজেক্টে অর্থায়নের উপর গুরুত্ব দেন।
জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ, অর্থপাচারের মতো ভয়াবহ ইস্যুকে সুশাসনের আওতাভুক্ত করা সম্ভব যেটি ইসলামিক ফাইন্যান্সের মূল জায়গা।
ইশরাত-ই-মওলা বলেন, ‘অনেক দেশের সরকারই ইসলামিক ফাইন্যান্স সিস্টেমের ব্যাপারে পরিপূর্ণ ধারণা না রাখায় ভুল ধারণা পোষণ করে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য বিনিয়োগ করার সুযোগ তৈরির কথা তুলে ধরে হালাল বিনিয়োগ ক্ষেত্র তৈরির জন্য চাহিদার জায়গাগুলো চিহ্নিত করার সঙ্গে সেটি পূরণ করার ব্যাপারেও কাজ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি।
এসকে মো. লুৎফুল কবির বাংলাদেশ মার্কেটের সাম্প্রতিক সময়ের সুকুক, গ্রীন বন্ড, গ্রীন সুকুক বা আসন্ন ব্লু বন্ডের কথা তুলে ধরেন। ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্টের ক্ষেত্রে ক্যাপিটাল মার্কেট রেগুলেটরের সদিচ্ছার কথা তুলে ধরে বৃহত্তর কল্যাণে কিভাবে রেগুলেটরা আরও ভূমিকা রাখতে পারে সেই ব্যাপারে পরামর্শ থাকলে তা জানাতে বলেন তিনি।
মো. গোলজারে নবী বিদ্যমান ইসলামিক ব্যাংকিং, ইসলামিক ক্যাপিটাল মার্কেট ও তাকাফুল-এর পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন-এর জন্য সুকুক রুল, সুকুক গাইডলাইনের পাশাপাশি সোশ্যাল সুকুক গাইডলাইনও জরুরি।
এ ছাড়া, যাকাত ফান্ডের ব্যবহার কিভাবে আরও ফলপ্রসূ করা যায় সেই ব্যাপারেও জোর দেন তিনি।