দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভরাট হয়ে যাওয়া সরকারি জলমহাল পুনঃখনন ও সংস্কার করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার সরকারি জলমহাল ইজারাসংক্রান্ত কমিটির সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
এ সময় ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘ভরাট হয়ে যাওয়া সরকারি জলমহাল পুনঃখনন ও সংস্কার করা গেলে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। মৎস্য আহরণ বাড়াতে পারলে খাদ্য চাহিদা মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।’
সভায় দেশের বিভিন্ন জেলার ১৩৭টি ২০ একরের ঊর্ধ্বে থাকা সরকারি জলমহালের ইজারা প্রস্তাব ছয় বছরের জন্য অনুমোদনে উত্থাপন হয়।
এর আগে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভূমিমন্ত্রী অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়া উদ্বোধন করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয় বলছে, প্রচলিত পদ্ধতিতে জলমহাল ইজারার আবেদনে অনেক সময় জলমহাল ইজারা প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগী ও দালালদের নানা অপকৌশলের কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতেন। অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়া চালুর ফলে এখন আর সেই সুযোগ নেই। অনলাইনে জলমহাল আবেদন শুরুর পর জলমহালসংশ্লিষ্ট অংশীজন থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ আসেনি।
উন্নয়ন প্রকল্পে ছয় বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে সরকারি জলমহাল এবং বিশেষ ধরনের বিবিধ জলমহাল ইজারা আবেদন মন্ত্রণালয় পর্যায়ে ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘সরকারি জলমহাল ইজারাসংক্রান্ত কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়।
সাধারণ আবেদনে ৩ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে বদ্ধ সরকারি জলমহালের ইজারা আবেদন জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়।
এ ছাড়াও সাধারণ আবেদনে ৩ বছরের জন্য ২০ একর পর্যন্ত বদ্ধ জলমহালের ইজারা আবেদন উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়।
বিল, হাওর, বাঁওড়, নিম্ন জলাভূমি ও নদনদীতে মৎস্য আহরণের এলাকাকে জলমহাল বলা হয়। এক হিসাবমতে ছোট-বড় মিলিয়ে দেশের জলমহালের সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার। এসব ইজারা দিয়ে বছরে প্রায় শত কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়।
বেশ কয়েকটি জলমহাল ঐতিহ্যবাহী ও দর্শনীয় স্থান হিসেবে ইজারাবিহীন রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দিনাজপুরের রামসাগর, সিরাজগঞ্জের হুরাসাগর ইত্যাদি। মাছ সংগ্রহের অভয়াশ্রম ঘোষিত জলমহালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুনামগঞ্জের টাংগুয়ার হাওর, মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর অন্যতম।