বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আস্থার বাহিনীতে পরিণত র‍্যাব: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

  •    
  • ২৮ মার্চ, ২০২২ ১৩:৫২

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দেশের একমাত্র এলিট ফোর্স র‍্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ইতোমধ্যে জননিরাপত্তা রক্ষায় গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতের মাধ্যমে এলিট ফোর্স র‍্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সোমবার সকালে র‍্যাব ফোর্সেসের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‍্যাব সদর দপ্তরে শহীদ লে. কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দেশের একমাত্র এলিট ফোর্স র‍্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ইতোমধ্যে জননিরাপত্তা রক্ষায় গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ধর্মীয় জঙ্গি মতবাদ প্রচার, অবৈধ অস্ত্রের যথেচ্ছ ব্যবহার, অপহরণ, চাঁদাবাজি, অবৈধ মাদকের বিস্তারসহ গুরুতর অপরাধের করাল গ্রাস থেকে দেশকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ‘দ্য আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ সংশোধন করে এলিট ফোর্স র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) গঠিত হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘র‍্যাব চরমপন্থির আগ্রাসন থেকে দেশকে মুক্ত করেছে। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের রক্তাক্ত জনপদে মানুষ পেয়েছে নিরাপদ জীবন। ফলে সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। জঙ্গি দমনের মাধ্যমে দেশের আপামর জনগণের নিরাপত্তা সমুন্নত হয়েছে।

র‍্যাব ফোর্সেসের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বাহিনীটির সদর দপ্তরে বিশেষ অতিথি হিসেবে কেক কাটেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: নিউজবাংলা

‘সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, জলদস্যুতা দমনের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়েছে। বিভিন্ন হত্যা, খুন, অপহরণ, ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ভিকটিম পরিবারের বিচার পাওয়ার পথ সুগম করেছে র‍্যাব।’

‘র‍্যাব মানবপাচার বিরোধী অভিযান পরিচালনা ও ভিকটিম উদ্ধার করার ফলে নতুন জীবনের স্বাদ পেয়েছে অনেকে। বিভিন্ন রকম দুর্ঘটনায় সাধারণ মানুষের পাশে থাকে বাহিনীটির সদস্যরা। র‍্যাব মানবিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে দুস্থ, অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়িয়েছে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।

জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিগত ও বর্তমান সময়ে শীর্ষ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান চালিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনে এই এলিট ফোর্স। সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি দমনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি ও কৌশলের আলোকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিদমনে যে সফল তৎপরতা চালিয়েছে তাতে র‍্যাবের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’

‘২০১৬ সালে হলি আর্টিজানসহ শোলাকিয়া, সিলেটের আতিয়া মহল, ঢাকার আশুলিয়া, মিরপুর, তেজগাঁও, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরাঞ্চলে ও ঝিনাইদহসহ প্রতিটি জঙ্গি দমন অপারেশনে র‍্যাব তার পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে। ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর র‍্যাব একইদিনে আশুলিয়া, গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে অভিযান চালিয়ে বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করে।’

‘এই দিন হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও জেএমবি প্রধান সারোয়ার জাহান গ্রেপ্তার এড়াতে বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তার মৃত্যু হয়। এধরনের বহু অভিযান চালিয়ে র‍্যাব জনমনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল। পাশাপাশি বিপথগামী জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষে কাজ করছে র‍্যাব,’ যোগ করেন মন্ত্রী।

‘মোটিভেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম সহায়তা প্রদান করে স্বাবলম্বী করা হচ্ছে। র‍্যাবের এই মানবিক উদ্যোগটি সফল হোক। এভাবে র‍্যাব মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।’

মাদকের ভয়াল ছোবলে বিপন্ন হচ্ছে অনেক মানুষের জীবন ও সংসার উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “মাদক বিস্তাররোধে র‍্যাব গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ এই সামাজিক যুদ্ধ এবং অভিযাত্রা আমাদের সফল করতে হবে। পাশাপাশি মাদকবিরোধী অভিযানের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা মাদকবিরোধী অভিযান সুসংহত কারার লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলায় একটি পরিপূর্ণ ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করেছি। একইসঙ্গে আমরা একটি যুগোপযোগী ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন’ প্রণয়ন করেছি।’

‘গত ১ বছরে র‍্যাবের অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ ইয়াবা, ১৪৯ কেজি হেরোইন, ২৮ কেজি আইস, ১ লাখ ৩৯ হাজার বোতল ফেনসিডিলসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭১১ কোটি টাকা।’

একটা সময় এমন ছিল যে, বিশ্ব ঐতিহ্যের নিদর্শন সুন্দরবন ছিল বনদস্যু ও জলদস্যুদের অভয়ারণ্য। সুন্দরবনের বাওয়ালি নৌয়ালীসহ প্রায় ২৫ লাখ মানুষের হর্তাকর্তা ছিল এই বনদস্যুরা। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধান ও র‍্যাবের কর্মতৎপরতায় সুন্দরবনকে আমরা দস্যুমুক্ত করেছি।

২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই পর্যন্ত ৩২টি জলদস্যু/বনদস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন সদস্য, ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদসহ র‍্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে।

জলসদ্যুদের আত্মসমর্পণ করানোর মধ্যেই র‍্যাব ক্ষান্ত হয়নি। বরং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে। সুন্দরবনে আজ শান্তির সুবাতাস বইছে। এছাড়াও র‍্যাবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কক্সবাজার ও মহেশখালী উপকূলীয় অঞ্চলের ১৮টি বাহিনীর ৭৭ জন সদস্য, ১৮৮টি অস্ত্র ও ৯ হাজার ৭০৩ রাউন্ড গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দমন, চরমপন্থি দমন, জলদস্যু দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সর্বশেষ বিজয়ের দ্বার প্রান্তে মাদকবিরোধী অভিযানে রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। র‍্যাবের বিশেষ উদ্যোগে র‍্যাব ডি-র‍্যাডিকালাইজেশন ও রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রাম ‘নবদিগন্তের পথে’ অত্যন্ত অভিনব ও যুগান্তকারী এই উদ্যোগ। অপরাধীর মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজের মূলধারায় আবার তাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। আত্মসমর্পণকৃত ৪২১ সন্ত্রাসীদের (জলদস্যু ও জঙ্গি) পুনর্বাসন প্রক্রিয়া যুক্ত রয়েছে।’

মানবিকতা দিয়ে অপরাধ দমনের এ সাফল্য বিশ্বের বুকে নজিরবিহীন বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ বিভাগের আরো খবর