করোনাভাইরাস থেকে দেশের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিতে এক দিনে এক কোটি নাগরিককে করোনারোধী টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে টিকাদানের বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি যাদের টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছিল তাদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হচ্ছে সোমবার সকাল থেকে। সেদিন এক কোটি ২০ লাখ টিকা দেয়ার কর্মসূচি ছিল। টিকাগ্রহীতাদের আগ্রহের কারণে পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়।
প্রথম ডোজ যে কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে দ্বিতীয় ডোজ সেই কেন্দ্র থেকেই নিতে হবে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সারা দেশে একযোগে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্যসচিব ডা. শামসুল হক।
শুরু হওয়া বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি চলবে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
তিনি বলেন, ‘বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে যারা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তারা আজ থেকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাবেন। এই কর্মসূচি চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত।
‘এমনকি এই তিন দিন ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর যাদের দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর চার মাস অতিবাহিত হয়েছে, তারা টিকার এসএমএস না পেলেও কেন্দ্রে গেলে টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে সম্মুখসারির যোদ্ধা, বয়োজ্যেষ্ঠ এবং নারীদের প্রাধান্য দেয়া হবে।’
শুরু হওয়া এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। তবে কেন্দ্রে ভিড় বেশি থাকলে সময় বাড়াতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
যেসব কেন্দ্রে মিলছে টিকার দ্বিতীয় ডোজ
এক কোটি টিকা দেয়ার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি কেন্দ্র স্থাপন করে টিকা দেয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এসব স্থান নির্ধারণ করেছেন। স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও চলছে এই কার্যক্রম।
এক কোটি টিকা দেয়ার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি কেন্দ্র স্থাপন করে টিকা দেয়া হচ্ছে। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে দল রয়েছে। নির্ধারিত কেন্দ্রের বাইরেও প্রতি উপজেলায় পাঁচটি, প্রতি জেলায় ২০টি করে ভ্রাম্যমাণ দল রয়েছে। যেখানে জনসমাগম বেশি সেখানে যেন এই দলের সদস্যরা গিয়ে টিকা দিয়ে আসতে পারেন।
এ ছাড়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ৩০টি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ৪০টি, বরিশাল, সিলেট, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহে প্রতিটি জোনে ৬০টি করে এবং খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও রংপুরের প্রতিটি জোনে অতিরিক্ত ২৫টি করে ভ্রাম্যমাণ দল রয়েছে।
ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলার প্রতিটি দল ৩০০ জনকে এবং সিটি করপোরেশনের প্রতিটি দল ৫০০ জনকে টিকা দেবে। সূত্র মতে, ৬ হাজার ৫২টি অস্থায়ী এবং সাত শতাধিক স্থায়ী কেন্দ্রে টিকা দেয়া চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এক দিনে এক কোটি ২০ ডোজ টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেয় সরকার।
সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এক দিনে এক কোটি টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় ডোজ বিষয়ে জানাতে মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে দেশে ২৩ কোটি ডোজ টিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে।