শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) সার্ভিসিংয়ে আসা লোকজন রাজধানীর সবুজবাগে গৃহবধূ তানিয়া আফরোজকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করছেন তার স্বামী মাইনুল ইসলাম।
রোববার সকালে তানিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তার স্বামী মাইনুল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গের সামনে স্ত্রীর মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ সময় তিনি জানান, ঘটনার সময় তিনি ফরিদপুরে ছিলেন। শনিবার বেলা ৩টা ৫২ মিনিটে তানিয়া তাকে কল দিয়েছিলেন। এসি সার্ভিসিংয়ের জন্য বাসায় কয়েকজন লোক এসেছে বলে সে সময় জানান তানিয়া। তখন মাইনুল স্ত্রীর ফোনের মাধ্যমেই তাদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই ব্যক্তিরা ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলেন, ‘কয়েক মাস আগে আপনাদের এসি সার্ভিসিং করে দিয়ে গেছি। তাই আবার এলাম, সার্ভিসিং করা লাগবে কি না জানতে।”
তখন মাইনুল তাদের বলেন, ‘এখন সার্ভিসিং লাগবে না। পরে প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করবেন।’
এরপর তানিয়াকে তাদের বিদায় দিতে বলেন।
মাইনুল জানান, রাতে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচিত একজন তাকে কল দিয়ে জানান, তার ছেলে তানভিরুল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বিষয়টি জানার জন্য তিনি তানিয়ার ফোনে কল করেন। কেউ রিসিভ না করায় পরে বাড়িওয়ালার কাছে ফোন করলে তিনি তাকে দ্রুত বাসায় আসতে বলেন।
এরপর রাতে ফরিদপুর থেকে ঢাকার বাসায় গিয়ে স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান তিনি।
মাইনুল বলেন, ‘আমার সন্দেহ, ওই ব্যক্তিরা তানিয়াকে ভুল বুঝিয়ে বাসায় ঢুকে এসি সার্ভিসিং করছিল। কারণ রাতে আমি বাসায় গিয়ে এসির কাভার খোলা অবস্থায় দেখতে পেয়েছি। তারা এসির কাজ করার সময় হয়তো আলমারি খুলে সেখানে খোঁজাখুঁজি করছিল। কারণ জামাকাপড়ও ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তখন তানিয়া দেখে ফেলায় তারা হয়তো তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’
সবুজবাগের বাসায় দুই শিশু সন্তানের মুখ বেঁধে তানিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানার সুন্দরপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর মেয়ে তানিয়া। বর্তমানে তিনি বেগুনবাড়ী মাস্টার বাড়ি রোডের ওই বাসায় সপরিবারে বাস করতেন।
মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রবিনা আউয়াল। সুরতহালে তিনি উল্লেখ করেন, নিহত তানিয়ার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে, ডান কানের নিচে কাটা ক্ষত, মাথার মাঝখানে আড়াই ইঞ্চি পরিমাণ ও মাথার পেছনের অংশে ডান কানের লতি থেকে বাম কান পর্যন্ত ১১ ইঞ্চি পরিমাণ কাটা। ডান কাঁধের পেছনে সাড়ে ৮ ইঞ্চি পরিমাণ কাটা ক্ষত রয়েছে।