বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য মাস্তানদের মতো: রিজভী

  •    
  • ২৭ মার্চ, ২০২২ ২০:১৬

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সভ্যতা, ভদ্রতা, রুচি সবকিছুকে জলাঞ্জলি দিয়ে বখাটে পাড়া, মহল্লার মাস্তানরা যেভাবে কথা বলে, সেভাবেই পুলিশের একজন বড় কর্মকর্তার মুখ থেকে যদি এমন কথা বের হয়, তাহলে এটা কত বড় ন্যক্কারজনক হতে পারে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের বক্তব্য মহল্লার মাস্তানদের মতো বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

এর আগে গত ২৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের সময় খালেদা জিয়া এবং সে সময় তার সাড়ে তিন বছর বয়সী ছেলে তারেক রহমানের ভূমিকা নিয়ে নতুন তথ্য দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিছুদিন আগে দলের নেত্রীকে ‘প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা’ উল্লেখ করার পর এবার তার দাবি, বেগম জিয়া মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে অষ্টম রেজিমেন্টের সৈন্যদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আরও দাবি করেছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে তারেকের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

খালেদাকে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা দাবির বিষয়টি হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছিলেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের একটা পার্টির সিনিয়র নেতারা বলা শুরু করেছেন, তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা। এটা হাস্যকর।’

শনিবার বিকেলে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘শুনেছি ওনার (ডিএমপি কমিশনার) এক্সটেনশন হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এক্সটেনশন নেয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে খুশি করতে কি এ কথাগুলো বলেছেন?’

তিনি বলেন, ‘সভ্যতা, ভদ্রতা, রুচি সবকিছুকে জলাঞ্জলি দিয়ে বখাটে পাড়া, মহল্লার মাস্তানরা যেভাবে কথা বলে, সেভাবেই পুলিশের একজন বড় কর্মকর্তার মুখ থেকে যদি এমন কথা বের হয়, তাহলে এটা কত বড় ন্যক্কারজনক হতে পারে।’

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোববার অনুষ্ঠানে রিজভী এসব কথা বলেন। দলটির নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের বার্ষিক শিক্ষাবৃত্তি দেয়ার জন্য এ অনুষ্ঠান হয়। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

রিজভী বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রের চরিত্র কেমন, তার চেহারা কেমন, এটা যদি আপনারা বুঝতে চান তাহলে দেখতে হবে ওই রাষ্ট্রের কর্মরত অফিসাররা কেমন? তাদের বৈশিষ্ট্য কেমন? এটা দেখলেই রাষ্ট্রের চরিত্রটা বোঝা যায়। দেশের কর্মকর্তাদের কথাবার্তা, আচার-আচরণেই বুঝতে পারবেন এই রাষ্ট্র কী ভয়ংকর।’

তিনি বলেন, ‘দেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সরকারের একজন কর্মকর্তা যার নিরপেক্ষ থাকার কথা, চুপচাপ থাকার কথা, তিনি যে কথা বলেছেন, এটা আমার কাছে মনে হয়েছে এই রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। এই রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে গেছে।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘যিনি এ দেশের মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মিণী সেই নেত্রী সম্পর্কে অসভ্য কথাবার্তা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার। আমার কাছে মনে হয়েছে শেখ হাসিনা যেমন তার বিরোধী শক্তিকে আক্রমণ করতে সভ্যতার সীমা মানেন না, ঠিক একই ভাষায় কথা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার।

‘এটা হাছান মাহমুদ, ওবায়দুল কাদের বললে এক কথা ছিল। এই কমিশনার তো বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়েও চাকরি করেছেন।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তবে এই ঘটনাকে ‘সুখবর’ বলছেন তিনি। তার মতে এমন ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকার এবং তাদের উচ্ছিষ্টভোগীদের আসল চেহারা উন্মোচিত হচ্ছে। এতে করে তাদের বিষয়ে জনগণের করণীয় নির্ধারণের কাজ অনেকটাই সহজ হবে বলে মনে করছেন তিনি।

গয়েশ্বর বলেন, ‘একজন ব্যক্তি স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রীর গৃহকর্মীর ন্যায় আচরণ করবে এটাই স্বাভাবিক। ফ্যাসিবাদী সরকারের অধীনে যারা কর্মরত আছেন, তাদের কাছে ভালো কিছু আশা না করা ভালো। তবে এটাও একটা সুখবর। দিন তাদের বেশি দিন নাই। শেষ সময়ে হোক, অল্প সময়ের জন্য হোক, তাদের আসল চরিত্র বেরিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে তাদের চিনতে সহজ হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘যত লোক আছেন, বর্তমান সরকারের উচ্ছিষ্টভোগী, সবাই স্বরুপে আবির্ভূত হোক জনগণের সামনে। জনগণ তাদের চিনতে পারবে। ভবিষ্যতে তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে পারবে। তাদের বিষয়ে জনগণের করণীয় নির্ধারণ সহজ হবে। অর্থাৎ মানুষ চেনার জন্য বেশি কষ্ট করতে হবে না।’

অনুষ্ঠানে গুম-খুন প্রতিরোধে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য দলের নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘আমরা গুম-খুনের এই অধ্যায়টা বন্ধ করতে চাই। এই বিষয়টা থাকুক আর আমরা কাজ করি, আমরা এটা চাই না। আর নয়। এজন্য আমাদের শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। পলায়নপর মনোবৃত্তি চলবে না।’

সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজসহ অনেকে।

এ বিভাগের আরো খবর