বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুই ইউনিয়নের যোগাযোগ টিকে আছে দেড় ফুটে

  •    
  • ২৭ মার্চ, ২০২২ ১৯:২০

সরেজমিন দেখা গেছে, ভাঙা অংশগুলোয় ঝুঁকি নিয়ে কোনোক্রমে যানবাহন চললেও যাত্রীরা এই স্থানগুলো হেঁটেই পার হচ্ছেন। ভূরঘাটা থেকে পূর্ব বনগ্রাম পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কের দেড় কিলোমিটারজুড়েই এমন চিত্র।

আর মাত্র দেড় ফুট ভাঙলেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ভূরঘাট ও বনগ্রাম ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ। এতে দুর্ভোগে পড়বে ওই দুই ইউনিয়নে বসবাসকারী অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। সংস্কারের মাত্র তিন মাসের মাথায় এই সড়কের কয়েকটি স্থান ধসে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এলজিইডির অধীনে নির্মিত সড়কটি বেহালের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত খাল খননকে দুষছে নির্মাণকারী সংস্থা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, প্রাকৃতিক কারণেই নদীতে ধসে পড়েছে সড়কের দেড় শ মিটার রাস্তা।

সরেজমিন দেখা গেছে, ভাঙা অংশগুলোয় ঝুঁকি নিয়ে কোনোক্রমে যানবাহন চললেও যাত্রীরা এই স্থানগুলো হেঁটেই পার হচ্ছেন। ভূরঘাটা থেকে পূর্ব বনগ্রাম পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কের দেড় কিলোমিটারজুড়েই এমন চিত্র।

যাত্রী নামিয়ে এভাবেই পার হয় যানবাহন

এলজিইডির কালকিনি উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, গ্রামীণ সড়ক পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ৪৮ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৫ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কার করা হয়। নির্মাণের সময়সীমা দেয়া হয়েছিল ৭৪ দিন। গত বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে ২৯ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও মূলত ডিসেম্বরে কাজটি বুঝিয়ে দেয়া হয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস নারগীস এন্টারপ্রাইজের নামে কাজ নিলেও মেসার্স সালেহা কনস্ট্রাকশনের প্রোপ্রাইটর মাহবুব হাওলাদার, সোনালী স্টোরের প্রোপ্রাইটর হারুন অর রশীদ হাওলাদার ও মেসার্স সাফিয়া এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর কামরুল ইসলাম নুরু গৌড়া সাব-কন্ট্রাক্টে কাজটি করেন। ইতোমধ্যেই সড়কের নির্মাণব্যয়ও উত্তোলন করা হয়েছে।

মাত্র তিন মাসেই সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। দোষীদের বিচারের পাশাপাশি সড়কটি পুনরায় নির্মাণ করে যান চলাচলের দাবি জানিয়েছেন তারা।

গোপালপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঠিকাদার যখন কাজ করেছে, আমরা এলাকাবাসী বারবার অনুরোধ করেছি বড় রোলার দিয়ে কাজ করার জন্য। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। ফলে নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তা শেষ। আর অল্প একটু ভাঙলেই যাতায়াত করা যাবে না।’

কাজীবাকাই ইউনিয়নের ৮০ বছরের নোয়াব আলী বলেন, ‘পূর্ব বনগ্রাম থেকে ইজিবাইকে আইছি। এখন হাঁইটা যাইতে হচ্ছে। হুনছি অনেক টাকা-পয়সা দিয়ে রাস্তাটা করছে। কিন্তু কী লাভ হলো আমাগো। রাস্তা শেষ হয়ে গেল। এখন কতদিন এভাবে পড়ে থাকে, আল্লাহই ভালো জানে। যারা রাস্তার কাম করছে, তাদের ধরে এনে দেখানো উচিত।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস নারগীস এন্টারপ্রাইজের কোনো কর্মকর্তাই এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মের্সাস সালেহা কনস্ট্রাকশনের প্রোপ্রাইটর মাহবুব হাওলাদার বলেন, ‘কাজটি শেষ হয়ে গেছে। কাজে কোনো ভুলভাল হয়েছে কি না বলতে পারব না। আমরা কয়েকজন মিলে এটা করেছি। এটা নুরু গৌড়ার লোকজন বলতে পারবে।’

এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের এত মাথা ঘামানো ঠিক না বলেও মন্তব্য করেন মাহবুব।

এদিকে মেসার্স সাফিয়া এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর কামরুল ইসলাম নুরু গৌড়াকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

সড়কের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত খাল খননকে দায়ী করছে এলজিইডি

তবে এলজিইজির মাদারীপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফ আলী খান দাবি করেছেন, মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত আমানগঞ্জ খাল খননের ফলেই সড়কটি ভেঙে পড়েছে। বিষয়টি তাদের লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

প্রকৌশলী আশরাফ বলেন, ‘আশা করি তারা বিষয়টিতে নজর দেবেন। এ ছাড়া আমাদের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবহেলা আছে কি না, সেটাও খুঁজে বের করব। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি মানি এখনও দেয়া হয়নি, তাদেরও বিষয়টি নজরে দেয়া হয়েছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আ স ম হাসান কবির বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেই সড়কটি ভেঙেছে। ফলে ওই ভাঙনকবলিত স্থানে খাল খনন করা হয়নি। আর খাল খনন নিয়ননীতি মেনেই করা হয়েছে। যেসব জায়গায় খালঘেঁষা রাস্তা রয়েছে, সেখানে গভীরও কম করা হয়েছে। আর ভাঙনকবলিত স্থানে খাল খনন করার প্রশ্নেই ওঠে না। এটা সড়ক বিভাগের বিষয়, আমাদের জড়ানো ঠিক হচ্ছে না।’

এ বিভাগের আরো খবর