ঢাকার সাভারে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে বন্ধুর হাতে এক কলেজ শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্তকে আটক করে মামলা দিয়ে রোববার বিকেলে আদালতে তোলা হয়। আদালত তাকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছে।
বন্ধুকে খুনের মামলায় গ্রেপ্তার আব্দুর রহমান পিয়াসকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালত এ রিমান্ড দেয়।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় বনগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম কোটাপাড়া এলাকার নির্মাণাধীন বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে শিক্ষার্থী সাকিব আল মামুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ১৮ বছরের সাকিব বনগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম কোটাপাড়া গ্রামের কাঞ্চন মিয়ার ছেলে। তিনি আমিনবাজর মফিদ-ই-আম স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
গ্রেপ্তার ১৮ বছরের আব্দুর রহমান পিয়াস একই এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন মো. ইমন ও মো. নাবিন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ১৬ মার্চ রাতে সাকিব নিখোঁজ হলে পরদিন তার বড় ভাই রাকিব মিয়া সাভার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। শনিবার রাতে সাকিবের মরদেহ উদ্ধারের পর পিয়াসসহ তিন বন্ধুর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে হত্যা মামলা করেন রাকিব।
মামলার বাদী রাকিব মিয়া জানান, ১৬ মার্চ রাত ৯টার দিকে সাকিবকে ফোন করে বাসা থেকে কে বা কারা ডেকে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজ করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।
এরপর শনিবার বাড়ির থেকে দূরে একটি পরিত্যক্ত ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে সাকিবের মরদেহ উদ্ধার করে তাদের খবর দেয়া হয়। পরে তার পরনের কাপড় ও স্যান্ডেল দেখে তারা মরদেহ শনাক্ত করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান জানান, শনিবার দুপুরে পশ্চিম কোটাপাড়া এলাকার পরিত্যক্ত বাড়িটিতে দুপুরে খেতে আসেন পাশের জমিতে কাজ করা কৃষকরা। এ সময় ১২ ফুট গভীর সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হলে তারা এগিয়ে গিয়ে মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে সন্ধ্যায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
তিনি বলেন, ‘মরদেহটি গলে পচে গিয়েছিল। তবে পরিবারের সদস্যরা পরনের গেঞ্জি, জুতা ও প্যান্ট দেখে সাকিবকে শনাক্ত করেন। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পর লাশ গুম করতে পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে যায় খুনিরা।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় শনিবার রাতেই অভিযুক্ত পিয়াসকে বিরুলিয়া ইউনিয়নের নগরকোন্ডা কোটাপাড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে পিয়াসকে প্রধান করে তার আরও দুই বন্ধু ইমন ও নাবিনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
‘আজ বিকেলে ওই মামলায় পিয়াসকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে রিমান্ড চেয়ে পাঠানো হয়। পরে আদালত তিন দিনের রিমান্ড দেয়। এ ঘটনায় বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
কেন হত্যা করা হয় জানতে চাইলে এসআই মোখলেছুর বলেন, ‘পিয়াসের কাছে ৬ হাজার টাকা পেত সাকিব। পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’