পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের বগটুই এলাকায় ১০ জনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি দলটির রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি।
আনারুল হোসেনকে তৃণমূল নেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডুমুর জোলা থেকে হেলিকপ্টারে রামপুরহাট যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন সাহায্য ঘোষণার সঙ্গে কিছু অর্থসাহায্য তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার বগটুইয়ে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনের ঘটনা পরবর্তী আগুনে পুড়ে ১০ জনের মৃত্যু ঘটে।
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এলাকায় সব সময় পুলিশ পিকেটিং থাকবে। যাদের বাড়িঘর পুড়ে গিয়েছে, তারা বাড়ি তৈরির জন্য এক লাখ টাকা করে পাবেন। প্রয়োজনে আরও এক লাখ টাকা পাবেন। মৃতদের পরিবার প্রতি আরও পাঁচ লাখ টাকা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘যাদের ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়ে জখম হয়েছে, তাদের এক লাখ করে টাকা দেয়া হবে। আর আগুনে পুড়ে জখম হওয়া তিনটি বাচ্চাকে ৫০ হাজার করে টাকা দেয়া হবে। চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার। মৃতদের পরিবার পিছু একজনকে সরকারি চাকরি দেয়া হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা জেনেও পুলিশকে ঠিকমতো কাজে লাগাননি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভাদু শেখকে মারার ঘটনা খারাপ। কিন্তু তারপর যা হয়েছে, সেটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। তদন্ত তদন্তের পথে চলবে। আমি এর মধ্যে কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করব না। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যেসব পুলিশ অফিসার এর সঙ্গে যুক্ত, তাদেরও ছাড়া হবে না।’
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আর কোনো রকম অশান্তি বরদাস্ত করব না। কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে পুলিশকে। যারা পারবেন না, তাদের পুলিশে থাকার প্রয়োজন নেই।’
তৃণমূলের একটি সূত্র জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মহাপরিচালক ও জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে আগামী ১০ দিন রাজ্যজুড়ে বেআইনি অস্ত্র, বোমা, বন্দুক উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা অবনতির অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছে বিজেপি। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সিপিএম ও কংগ্রেস এ ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে।
ইতোমধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট বগটুই হত্যাকাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি মামলা শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি শেষে রায় দান স্থগিত রেখেছে আদালত।
এদিন বিজেপির পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বগটুই গেছেন। এছাড়া কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধিদলও সেখানে গেছেন।