শতভাগ বিদ্যুতায়নের পর দেশের সব গ্রাহকের কাছে নিরবিচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পৌঁছানোকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষে স্বাধীনতা পুরস্কার গ্রহণের পর সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘এখন প্রত্যাশা বাড়ছে এবং দিন দিন আরও বাড়বে। এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো নিরবিচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ। সারা বিশ্বে যে অবস্থা, তেলের দামের যে অবস্থা এবং এলএনজি গ্যাসের দামের যে ঊর্ধ্বগতি সেটাকে মাথায় নিয়ে সামনে এগুনো চিন্তার বিষয়। তবে আমরা সবকিছুই মাথায় রেখেছি, আশা করছি আমরা সামলাতে পারবো।
‘এখনও আমরা বড় ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আমি মনে করি আমাদের যে প্রকল্পগুলো এখন আছে সেগুলো নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ক্ষেত্র তৈরি করবে। বিশেষ করে পায়রার ১৩২০ মেগাওয়াট, রামপাল আছে মাতাবাবাড়ি আছে সবগুলোই কিন্তু নিরবিচ্ছিন্ন এবং সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুতের ক্ষেত্র তৈরি করবে।’
বিদ্যুতের দাম বাড়বে কিনা-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দাম বাড়বে কিনা এটা আমরা বলতে পারছি না। এটার বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সিদ্ধান্ত নেবে যেহেতু দাম বাড়ানোর একটি প্রস্তাব গেছে। আমরা চাচ্ছি যাতে এটা খুব সহনীয় পর্যায়ে বাড়ে।’
নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিতের ক্ষেত্রে আগামী বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না তবে আমাদের চেষ্টা থাকবে যত দ্রুত নিয়ে আসা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলি সাউথ কোরিয়াতে প্রায় ২০ থেকে ৩০ বছর লেগেছে। আমাদের হয়তো এত সময় লাগবে না, এখন অনেক টেকনোলজি চলে এসেছে। ২০২৪ সাল নাগাদ আশা করি আমরা একটি ভালো জায়গায় যেতে পারবো।
‘তবে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। সাতশ নদীর দেশ। নদীর উপর দিয়ে লাইন নিতে হবে। সামনে ঝড়ের সময় আসছে দেখবেন যে কত টাওয়ার পড়ে গেছে, তার ছিঁড়ে গেছে। চরাঞ্চলে তার ঠিক করতে সময় লাগবে। এই চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েই কাজ করতে হবে।’
বিশ্ব বাজারে তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রাহকদের সামনের দিনগুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘আজ সকালেও আমি মার্কেট দেখছিলাম। ২৭০ ডলারের মার্কেট সাতশ ডলার হয়েছে। এলএনজি যে কার্গো আমরা ২০০ ডলার দিয়ে নিতাম সেটা এখন ১ হাজার ২০০ ডলারে নিচ্ছি। এটা একটি বড় বিষয় যে আগামীতে আমরা কিভাবে ম্যানেজ করে চলবো। আগামী দিনে বিদ্যুতের ব্যবহারও বাড়বে।
‘বিশ্ব এখন অস্থিতিশীল। তেল, গ্যাসসহ সব কিছুর দাম বেড়েছে। এজন্য মনে করি, আমাদের গ্রাহকদের সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা উচিত। সামনে রমজান আসছে। এ সময় তারাবির নামাজের সময় এখন মসজিদগুলোতে এসিতে যে পরিমাণ লোড ব্যবহার হচ্ছে তার চেয়ে দেড় হাজার মেগওয়াট অতিরিক্ত লোড আমাদের নিতে হবে। আমি বলছি না এসি বন্ধ করে দিতে কিন্তু এটা সাশ্রয়ীভাবে চালানো যায়। আমরা যদি আরেকটু সাবধানতা অবলম্বন করি তাহলে আমরা কিন্তু পারবো।’