নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবি ও হতাহতের ঘটনায় ধাক্কা দেয়া জাহাজের ওপরই শুরু থেকে দায় চাপাচ্ছিলেন দুর্ঘটনাকবলিতদের স্বজন ও সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশ। তবে কেউ কেউ মনে করছেন জাহাজ নয়, বরং লঞ্চের চালকই এই দুর্ঘটনায় বড় ভূমিকা রেখেছে।
প্রাথমিক তদন্তে উভয় চালককেই দায়ী করেছে এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের গঠিত একটি তদন্ত কমিটি।
ওই কমিটির মতে, নিয়ম অনুযায়ী, কার্গো জাহাজটি নদীর সেন্ট্রাল চ্যানেল ধরে নির্দিষ্ট গতিতে এগিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটি ছিল বেপরোয়া। এ ছাড়া জাহাজটির সামনে কোনো ওয়াচম্যানও ছিল না। জাহাজটি যারা পরিচালনা করছিলেন তাদের গাফিলতি সুস্পষ্ট।
এদিকে নৌ ট্রাফিক নিয়মে নারায়ণগঞ্জ সেন্ট্রাল ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসার উদ্দিন শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম সীমানা ধরে চলাচলের কথা ছিল, কিন্তু ডুবে যাওয়ার আগ মুহূর্তে এটি নদীর পূর্ব সীমানার দিকে যাচ্ছিল।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামীম ব্যাপারী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে দুর্ঘটনার জন্য কার্গো জাহাজ ও লঞ্চ উভয় পক্ষই দায়ী। দুটি নৌযানই বেপরোয়া গতিতে চলছিল। তারা কেউই আইন মানেনি।’
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানান, নিয়ম থাকলেও জাহাজের মাথায় কোনো ওয়াচম্যান ছিলেন না। দুর্ঘটনা দেখার পরও গতিরোধ করেনি। তা ছাড়া যে লঞ্চটি ডুবেছে সেই লঞ্চের চালক জাহাজটিকে দূর থেকে দেখার পরও সে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। দুই চালকের ভুলেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমাদের কমিটি সম্ভাব্য সব কারণ তদন্তে তুলে ধরবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনতে উদঘাটিত কারণগুলো সুনির্দিষ্টভাবে লেখা থাকবে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।’
বিভিন্ন পক্ষের বিভিন্ন মত
নদীতে নৌ ট্রাফিকব্যবস্থার তদারকি করেন বিআইডব্লিউটিএ-র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপসহকারী পরিচালক বাবু লাল বৈদ্য। তিনি দাবি করেন, ওই নদীতে কার্গো জাহাজের ঘণ্টায় গতিবেগ থাকার কথা ৬ নটিক্যাল মাইল। কিন্তু এমভি রূপসী জাহাজের গতিবেগ ছিল আনুমানিক ১০ নটিক্যাল মাইল।
নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বলেন, ‘যারা জাহাজটি পরিচালনা করছিলেন তাদের গাফিলতি রয়েছে। কারণ একটি ছোট নৌযানও যদি সামনের দিকে আসে সেটিও দেখা যায়। কিন্তু তারপরও লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয় জাহাজটি। শুধু ধাক্কাই নয়, লঞ্চটিকে সামনের দিকে টেনে নিয়ে ডুবিয়ে দিয়েছে। এটা পরিষ্কার যে লঞ্চটি ডুবে হতাহতের জন্য জাহাজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই দায়ী।’
মূল চালক জাহাজটি চালাচ্ছিলেন কি না সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি জানান, অধিকাংশ কার্গো জাহাজের চালক পণ্য খালাসের পর বাড়িতে চলে যান। আর জাহাজ চালিয়ে যান সহকারীরা।
দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চটি উদ্ধারের চেষ্টা করছেন কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। ছবি: নিউজবাংলা
তবে তার কথা মানতে নারাজ বাংলাদেশ শ্রমিক জাহাজি ফেডারেশন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সবুজ সিকদার বলেন, শুধু এমভি রূপসী নয়, লঞ্চটিও এই ঘটনার জন্য দায়ী। কারণ জাহাজটি ২২৫ ফুটের বেশি লম্বা। দুর্ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা সামনেই সেতু। ওই সেতুর তিনটি পিলারের মাঝে তিনটি ফাঁকা। ফলে জাহাজটি যাবে মাঝখান দিয়ে আর লঞ্চটি ডান পাশেরটি দিয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাহাজের চালকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, লঞ্চটি তাদের সামনে ছিল। তারা লঞ্চটিকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তখনই ডান পাশ থেকে হঠাৎ বাঁয়ে মোড় নিয়ে জাহাজের হেড ক্রস করতে চায় লঞ্চচালক। এর ফলেই ঘটে দুর্ঘটনাটি।'
সবুজ সিকদার দাবি করেন, তিনি জানতে পেরেছেন ওই লঞ্চে কোনো চালক বা মাস্টার ছিল না। লঞ্চটি চালাচ্ছিলেন একজন সুকানি। আর লঞ্চটির মালিকের ছেলেই কেরানি; তিনিই লঞ্চের টিকিট কাটেন। ঘটনার সময় তিনিও লঞ্চে ছিলেন এবং বেঁচে ফিরেছেন। গ্রিজার ছিল লঞ্চের ইঞ্জিনের কাছে।
সবুজ সিকদার বলেন, ‘তারা একটি লঞ্চ মাত্র তিনজন মানুষ কিভাবে পরিচালনা করেন?’
মুন্সীগঞ্জের কোনো লঞ্চেই মাস্টার নেই দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘এটা দেখার দায়িত্ব বিআইডব্লিউএ-এর। কিন্তু তারা ঘাটে যান না, শুধু অফিসে বসে থাকেন। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছেই।’
বেঁচে ফেরা লঞ্চযাত্রী আর প্রত্যক্ষদর্শীদের মত
ঘটনার সময়ের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, লঞ্চটি পশ্চিম পাশ থেকে মাঝনদী ধরে পূর্ব পাশের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় কার্গো জাহাজটির সামনের অংশ লঞ্চটির বডির মাঝামাঝি আটকে যায়। চলন্ত অবস্থায় কিছুক্ষণ লঞ্চটিকে ধাক্কা দিয়ে সামনে নিতে নিতে ডুবিয়ে দেয় জাহাজটি। তবে এর আগে নৌযান দুটির মধ্যে কিভাবে সংযোগ ঘটল, তা জানতে কথা হয় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা কয়েক যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে।
বেঁচে ফেরা আবদুল রৌফ লঞ্চডুবিতে চোখের সামনে ছেলের বউ আর নাতিকে পানির নিচে তলিয়ে যেতে দেখেছেন। নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে মুন্সীগঞ্জ ফিরছিলেন তারা।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রৌফ বলেন, ‘লঞ্চের ওপরে ছিলাম। সেখানে লঞ্চটা ডুবছে তার একটু আগে দেখেছি বাঁ পাশ থেকে লঞ্চটা ডানে যাইতাছে। এরপর দেখি লঞ্চটা জাহাজটার সামনের দিকে যাইতাছে। তখন অন্য যাত্রীরা চিল্লাইতেছিল। এরপরই ডুইবা গেছে।’
লঞ্চের আরেক যাত্রী ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী মোকছেদা বেগম। লঞ্চ ডুবে যাওয়ার পর তিনি নদীতে ভেসে থাকা একটি বস্তা আঁকড়ে ভেসে ছিলেন। পরে একটি ট্রলার গিয়ে তাকে টেনে তুললে প্রাণে বেঁচে যান।
মোকছেদা বলেন, ‘আমার বাড়ি মুন্সীগঞ্জে। তাই লঞ্চে করে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ আসি, কাজ শেষে আবার বাড়ি যাই।’
দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চটি উদ্ধার করে শীতলক্ষ্যার ধারে আনা হয়। ছবি: নিউজবাংলা
ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘লঞ্চটার দ্বিতীয় তলায় কেবিনের চেয়ারে বসেছিলাম। হঠাৎ দেখি লঞ্চটা আর জাহাজটা একসঙ্গে যাইতাছে আর চাপতাছে। সঙ্গে সঙ্গেই দেখি লঞ্চ আর জাহাজ লাইগা গেল। পরে আর মনে নাই।’
ঘটনার আগে লঞ্চ ও জাহাজটিকে দেখেছেন টানবাজার এলাকার শামীম মিয়া। শীতলক্ষ্যা নদীর মীনা বাজার ঘাটের ওয়াকওয়ে রেলিংয়ের ওপর বসে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। বন্ধুদের মধ্যে একজন বলেছিল, ‘দেখ, ছোট লঞ্চটা টানে ক্যামনে!’
শামীম বলেন, ‘এরপরই দেখি বড় একটা জাহাজ যাইতাছে। তয় লঞ্চ আর জাহাজের মধ্যে বেশি একটা দূরত্ব ছিল না।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আলামানি নগর এলাকার বাসিন্দা সিজান বলেন, ‘আমার ঘর নদীর তীরে। ঘটনার সময় জানালা দিয়া দেখলাম বড় একটা জাহাজের সঙ্গে ছোট লঞ্চটা লাইগা যাইতাছে। আমি যখন দেখছি তখন জাহাজটা আর লঞ্চের মাঝখানে কিছুটা দূরত্ব ছিল আর লোকজন চিৎকার করতেছিল। ঘর থেকে বাইরে যেতে যেতে দেখি লঞ্চটা জাহাজের সামনের দিকে যাইতাছে, জাহাজও দ্রুত চলতাছে। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখলাম ডুবে গেল। পরে বাড়ির সামনের ঘাটের ট্রলার নিয়া সেখানে গেছি। ৬-৭ জনরে ট্রলারে কইরা পাড়ে তুলছি।’
অন্য লঞ্চের মাস্টার ও কার্গো জাহাজসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মত
দুর্ঘটনাটি সম্পর্কে কথা হয় একাধিক লঞ্চের চালক, মাস্টার ও সুকানির সঙ্গে। তারা নারায়গঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও কুমিল্লার বিভিন্ন ঘাটে লঞ্চ চালিয়ে থাকেন।
তাদের মধ্যে এক লঞ্চের মাস্টার মিজানুর রহমান জানান, নারায়ণগঞ্জের সেন্ট্রাল ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জসহ সাতটি লাইনে অন্তত ৭০টি লঞ্চ চলাচল করে। ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার পর নদীর ডানপাশ ধরে রওনা হয় এটাই নিয়ম। লঞ্চ চলাচলের আইন যার যার হাতের ডানে।
তিনি জানান, মুন্সিগঞ্জের লঞ্চগুলো শীতলক্ষ্যা সেতু পার হয়ে নদীর দুই পাশের অবস্থা দেখে সর্তকভাবে বাম পাশে গিয়ে মদনগঞ্জ ঘাটে ভিড়ে। সেখানে যাত্রী ওঠা-নামার পর আবার রওনা হয়। আইনেও আছে প্রতিটি লঞ্চ ঘাট থেকে ছাড়ার পর নদীতে সে তার ডানে থাকবে। নির্দিষ্ট ঘাটের সামনে গিয়ে সতর্কভাবে ভিড়বে।
তিনি বলেন, ‘লঞ্চ ডুবে যাওয়ার ভিডিওতে দেখলাম আফসার উদ্দিন নামের লঞ্চটা পূর্ব পারের দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু তার তো সেতু পার হয়ে যাওয়ার কথা।’
মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিস ও কোস্ট গার্ড। ছবি: নিউজবাংলা
তিনি আরও বলেন, ‘যখন একটা লঞ্চ চলাচল করে সেখানে চালক ছাড়াও আরও কয়েকজন থাকেন। পেছনে এত বড় একটা জাহাজ তো তাদের ভালো করেই দেখার কথা। উচিত ছিল, যেহেতু জাহাজটি কাছাকাছি, সেহেতু অন্য পাশে থাকা। জাহাজটি তার লঞ্চ অতিক্রম করার পর বাঁয়ে যাওয়া।’
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কার্গোচালক বলেন, ‘শীতলক্ষ্যার এই অংশে অনেক ঘাট। তাই নদীতে মাঝখানে ও আশপাশে প্রচুর ট্রলার, নৌকা আর লঞ্চ থাকে। তাই আমি যখন জাহাজ নিয়ে যাই তখন মেঘনা যাওয়ার আগ পর্যন্ত নির্দিষ্ট গতির চেয়েও কমিয়ে রাখি। নদীতে এত ছোট নৌযান যে জাহাজের গতি বাড়াতে ভয় লাগে।’
শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবির ঘটনায় মরদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা
দুর্ঘটনার ভিডিও দেখে তিনি জানান, লঞ্চটি জাহাজের আগে ছিল। অর্থাৎ তার অনেক পেছনে ছিল জাহাজ। সেটি দ্রুত চালিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছিল। যিনি জাহাজটি চালিয়েছেন তার তো দূর থেকে লঞ্চটি দেখার কথা। তা ছাড়া জাহাজে আধুনিক সিস্টেম আছে, সামনে কিছু থাকলে সেটা বোঝা যায়। যখন জাহাজচালক সামনের দিকে যাচ্ছিলেন তার প্রচুর পরিমাণে হর্ন বাজানো উচিত ছিল। তা ছাড়া জাহাজে মাইক রয়েছে। চালক দূর থেকে মাইকে লঞ্চটিকে কাছে না আসতে নিষেধ করতে পারতেন।
জাহাজের সংশ্লিষ্টরা কী বলছে
এমভি রূপসী-৯ নামের জাহাজটি চালাচ্ছিলেন রমজান আলী শেখ। ঘটনার পর তাকে গ্রেপ্তার করে নৌ থানায় আনা হয়। সেখানে তিনি বলেন, ‘সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটি তিনি দীর্ঘদিন ধরে চালাচ্ছেন। ঘটনার দিন জাহাজের সামনে দিয়ে লঞ্চটি গতি বাড়িয়ে দিয়ে যেতে চেয়েছিল। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। হঠাৎ করে সামনে চলে আসায় জাহাজ নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।’
তবে তিনি কেন জাহাজ না থামিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন, সেই উত্তর দেননি।
সিটি গ্রুপের নেভিগেশন বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চলন্ত ট্রেন যেমন হঠাৎ থামানো যায় না, তেমনি জাহাজও। লঞ্চটি জাহাজের মাথার সামনে দিয়ে ক্রস করে যেতে চেয়েছে। ফলে সেখানে তো সঙ্গে সঙ্গে জাহাজ থামানো সম্ভব নয়।’
নাগরিক সংগঠনগুলো কী বলছে
সুশাসনের জন্য নাগরিক ‘সুজন’ এর সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা বলেন, ‘লঞ্চ ডুবির ভিডিওতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে কার্গো জাহাজের গতি। সামনে একটি সেতু থাকার পরও সেটি কিভাবে বেপরোয়াভাবে চালায়। তার ডান দিক থেকে লঞ্চটি যাত্রী নিয়ে পার হচ্ছে। আমরা যেটা বুঝতে পারছি তারা প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তারা প্রতিযোগিতা করে মানুষ মারবে- এটা কেমন ব্যবহার।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিয়ম মেনে নৌযান চলাচল করছে কি না তা দেখবে বিআইডব্লিউটিএ। কিন্তু তারা সেটা করে না। তারা ঘটনা ঘটার পর তৎপর হয়ে ওঠে।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ও নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক জানান, ‘নদীতে নৌপুলিশ আছে বলে আমরা মনে করি না। কারণ শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রায় সময় ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করত তাহলে তো নৌযানগুলো আইন মানতে বাধ্য থাকত।’
বিআইডব্লিউটিএ-এর দায় কতটুকু
বিআইডব্লিউটিএ-এর যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল জানিয়েছেন, নৌযান চলাচলের জন্য বয়াবাতি, মার্কা দেয়াসহ সব রকম ব্যবস্থা তারা করে থাকেন। যানগুলোকে সঠিক পথে যেতে সব রকম দিকনির্দেশনাও দেয়া হয় তাদের পক্ষ থেকে।
তারপরও কেন দুর্ঘটনা ঘটল জানতে চাইলে কিছুটা ক্ষেপে গিয়ে মাসুদ কামাল বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা দেখা। কারা কখন নৌযান নিয়ে যাবে, কোন নৌযান কিভাবে যাবে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের কাজ আইন দেখা আমরা আইন দেখছি।’