গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের ছাত্রলীগ নেতা রবিন সরদারের নামে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবি ও থানায় অপরাধীদের বোর্ডে তার ছবি লাগানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
প্রায় আধা ঘণ্টা গাজীপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ভোগান্তিতে পড়েন এ পথে চলাচলকারীরা।
ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে বর্তমানে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত রবিন কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি প্রার্থী।বুধবার দুপুর ১২টার দিকে কলেজের সামনে মানববন্ধন শুরু করেন রবিনের অনুসারীরা। মানববন্ধন শেষে পৌনে ১টার দিকে গাজীপুর-টাঙ্গাইল সড়ক অবরোধ করেন তারা। সোয়া ১টার দিকে পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মালেক খসরু খান নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি বলেন, রবিন সরদারের বিরুদ্ধে বাসন থানায় মারামারি, অপহরণ ও দ্রুত বিচার আইনসহ একাধিক মামলা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে সাবেক জয়দেবপুর থানায় (বর্তমান সদর থানা) মামলা রয়েছে। মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন আছে। বুধবার দুপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে তার অনুসারীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে সড়ক থেকে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
ছাত্রলীগ নেতা রবিন সরদার বলেন, ‘গাজীপুর সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বাসন থানার ওসি হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন আমার বিরুদ্ধে দুই দিনে ৬টি মামলা নিয়েছেন। পরবর্তীতে সদর থানায় বদলি হয়ে ২০২১ সালে আরও দুটি মামলা নেন। প্রত্যেকটি মামলার এজাহার প্রায় একই রকম এবং আসামিও ঘুরেফিরে একই।’
বাদীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রবিন।
রবিন আরও বলেন, ‘সম্প্রতি সদর থানার অপরাধীদের বোর্ডে আমাকে ডাকাত চিহ্নিত করে ছবি লাগানো হয়েছে, যা পরবর্তীতে যুবদল কর্মী সোহেল রানা ফেসবুকে পোস্ট করেছে। সোহেল রানা এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও মাদক কারবারি।
‘বিষয়টি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদে তারা মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেন। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের সহায়তায় শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘থানার ওসি হিসেবে কেউ যদি আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেন সেটা মামলা হবে এটাই বিধান। বাদী মামলা করতে চাইলে আইন অনুযায়ী আমি মামলা নিতে বাধ্য। কে কার বিরুদ্ধে মামলা করল সেটা মুখ্য বিষয় না। ৬টা মামলায় আলাদা আলাদা বাদী। সদর থানায় যোগদানের পর রবিনের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা হয়েছে।
‘পুলিশ অপহৃত ছেলেকে উদ্ধার করার পর সেই ছেলের পরিবার মামলা করেছে। পুলিশ বাদী হয়ে কোনো মামলা দেয় নাই। সবগুলো মামলার বাদী সাধারণ মানুষ।’
ওসি আরও বলেন, ‘পুলিশ তদন্ত করেছে, যেটার সত্যতা পেয়েছে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে। যেটার সত্যতা পায়নি সেটার ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে বা আদালত নিষ্পত্তি করেছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারামারি, অপহরণ, দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে।’
থানার অপরাধী বোর্ডে ছাত্রলীগ নেতার ছবির বিষয়ে ওসি রফিকুল বলেন, ‘একজনের বিরুদ্ধে ১২/১৪টা মামলা হলে অপরাধী বোর্ডে ছবি উঠতেই পারে। অপরাধী বোর্ডে নাম উঠানোর জন্য আলাদা একটা সেকশন আছে। ওই নাম ওসি ওঠায় না। বিষয়টি আমি জানার পর খোঁজ নিয়েছি, বোর্ডে আমি তার ছবি পাইনি। তবে অপরাধী বোর্ডে তাকে ডাকাত চিহ্নিত করার বিষয়টা সত্য না।’