যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা হোসেন সুবহার করা মামলায় গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াত মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এদিন মামলাটির জামিন শুনানির জন্য তারিখ ঠিক ছিল। ইলিয়াস অসুস্থ রয়েছেন জানিয়ে জামিন শুনানি পেছানোর আবেদন করেন তার আইনজীবী।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এর বিরোধিতা করে বলেন, ‘আদালতে না এলেও আসামি এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রার্থনা করছি।’
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইশতিয়াক আলম গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পান ইলিয়াস।
জামিনের মেয়াদ শেষ হতে যাওয়ায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি।
আদালত বাদীর উপস্থিতিতে জামিন শুনানির জন্য ২ মার্চ তারিখ ঠিক করে। ওইদিন ইলিয়াস আদালতে না এসে সময় আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে ২২ মার্চ জামিন শুনানির তারিখ ঠিক করে।
বনানী থানায় ৩ জানুয়ারি ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মামলা করেন সুবহা। যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এজাহারে সুবহা জানান, গায়ক ইলিয়াসের সঙ্গে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সুবহার পরিচয় হয়। দ্রুতই তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। তারা বিয়ে করেন ১ ডিসেম্বর। বিয়ের পরই ইলিয়াসের একাধিক বিয়ে ও প্রেমের তথ্য তিনি জানতে পারেন।
এদিকে বিয়ের সময় সুবহার পরিবার ইলিয়াসকে ১২ লাখ টাকা দামের রোলেক্স ঘড়িসহ ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার জিনিস দেয়। কিন্তু ইলিয়াস এতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি সুবহার কাছে ফ্ল্যাট কিনতে ৫০ লাখ ও গাড়ির ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন। ৯ ডিসেম্বর ইউটিউব চ্যানেল কিনতে সুবহার মায়ের কাছেও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ইলিয়াস। তখন সুবহার পরিবার তাকে আড়াই লাখ টাকা দেয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, দাম্পত্যের শুরুতেই ইলিয়াস ফ্ল্যাট ও গাড়ি কেনার টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন সুবহাকে। ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে এ টাকা দাবির বিষয় নিয়ে দুজনের ঝগড়া হয়। এরই জেরে রাত ৮টার দিকে সুবহাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। ৮০ লাখ টাকা যৌতুক দিতে রাজি না হলে ইলিয়াস পরদিন সুবহাকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারেন। ইলিয়াস তখন সুবহার চুলের মুঠি ধরে মাথা দেয়ালের সঙ্গে ঠুকে দেন। এরপর ইলিয়াস ব্যথার ওষুধ বলে যা দেন তা খেয়ে সুবহা অচেতন হয়ে পড়েন।
সুবহাকে অচেতন করে ইলিয়াস আলমারিতে থাকা ২০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যান বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সুবহা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।