নাসিমা আক্তার রাজধানীর কল্যাণপুরে নতুনবাজার এলাকায় ৯ নম্বর বস্তিতে পরিবার নিয়ে থাকতেন। পাশাপাশি কাপড়ের ব্যবসা করতেন। শুক্রবার দুই লাখ টাকার কাপড় তুলেছিলেন দোকানে। আগুনে তার দোকানের সব কাপড় পুড়ে গেছে।
রোববার দুপুরে মেয়ের জামাইয়ের হাতে মার খেয়ে ফোলা পা নিয়ে ছেলের বৌয়ের সহযোগিতায় কোনো রকমে ঘর থেকে বের হয়েছেন।
রোববার রাতে নাসিমার বসবাসরত কল্যাণপুরের ওই বস্তিতে লাগা আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট টানা দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনে।
বস্তিবাসী এখন খোলা মাঠে পরিবার নিয়ে অবস্থান করছেন। চারদিকে হাহাকার আর কান্নার রোল। আগুন লাগার পর, যে যা কিছু বের করে আনতে পেরেছেন, তা নিয়েই খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। অনেকেই আবার অভিযোগ করছেন, ঘরের মূল্যবান জিনিস লুট ও চুরি হয়েছে।
নাসিমা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিভাবে আগুন লাগছে, জানি না। আমার ঘরে দুই লাখ টাকার কাপড় ছিল। সব পুড়ে গেছে। আগুন লাগছে ওই তালগাছের গোড়ায়। আমি ঘরের মধ্যে শুয়ে ছিলাম।’
জামাইয়ের কাছে মার খাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুপুরবেলা আমার মাইয়ার জামাই মাইয়ার সঙ্গে ঝামেলা কইরা আমার পায়ের মধ্যে বাড়ি মারছে। পা নিয়া নড়তে পারতেছিলাম না। দেহেন ফুইলা কী হইছে। ফোলা পা নিয়া কিছু বাইর করতে পারি নাই। ঘর থেইকা আমারে টাইনা, ছ্যাচড়াইয়া বাইর করছে। দুপুরে মার খেয়ে পা ফোলছে, রাইতে মোর সব পুড়ছে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ঘরের খাট, শোকেস, টিভি, ফ্রিজ, ব্যবসার মাল সব শেষ। থ্রিপিস, শাড়ি, লুঙ্গি, থান কাপড়ে আমার ঘর ভরা ছিল। পরশুদিন দুই লাখ টাকার মাল আনছিলাম। আমি এই বস্তিতে ব্যবসা করতাম। আমার সব শেষ।’
ঘর থেকে বের হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুপুর ২টার সময় আমার পা ভাঙছে। আমার মাইয়ার জামাই বউ নিয়া এই বস্তিতে থাকে। আমার পাঁচ ছেলে-মেয়ে। আগুন লাগার সময় কেউ ছিল না। শুধু পোলার বউ ছিল। ও অনেক কষ্টে আমারে বাইর করছে। মানুষ আমার সামনে দিয়া লুট করতাছিল, চুরি করতাছিল।’