শুধু পাহারা দিয়ে অপরাধ দমন করা যায় না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। বলেন, ‘অপরাধীদের শনাক্ত করে, গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে অপরাধ প্রতিরোধ করতে হবে। এটাই আসল পদ্ধতি।’
রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ফেব্রুয়ারি মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন।
রমজানে ঢাকার চাকা সচল রাখতে তিনি বলেন, ‘সামনে রমজান মাস আসছে। এবার রমজান মাসে স্কুল খোলা থাকবে, যা ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ওপর ব্যাপক চাপ ফেলবে। এটা ডিএমপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। থানার টহল পার্টিগুলোকে বড় মোড়গুলোয় ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করতে হবে।’
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যে যেখানেই চাকরি করি না কেন, কারও দৃষ্টিতে কোনো অনিয়ম বা ট্রাফিক বিশৃঙ্খলা চোখে পড়লে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানাতে হবে।’
রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ফেব্রুয়ারি মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা হয়। ছবি: নিউজবাংলা
ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকা ওঠানো কিংবা গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিবহনের ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার পাশাপাশি ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
গত কয়েক মাসে ঢাকার কোথাও কোনো বড় ধরনের অঘটন না ঘটায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সবাইকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।
‘আমাদের সবাইকে শতভাগ উজাড় করে দিতে হবে। সবার চলাচলের নিরাপত্তা বিধান করতে পারলেই আমরা সফল হিসেবে গণ্য হব।’
ফেব্রুয়ারির মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির আটটি ক্রাইম বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে তেজগাঁও বিভাগ ও শ্রেষ্ঠ থানা হয়েছে মোহাম্মদপুর থানা। ওয়ারেন্ট নিষ্পত্তিতে প্রথম হয়েছে উত্তরা বিভাগ।
ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনারদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মুজিব আহম্মেদ পাটওয়ারী।
পুলিশ পরিদর্শক তদন্তদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন ধানমন্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম। পুলিশ পরিদর্শকদের (অপারেশনস) মধ্যে প্রথম হয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) তোফাজ্জল হোসেন।
শ্রেষ্ঠ এসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন পল্লবী থানার এসআই আনোয়ারুল ইসলাম ও লালবাগ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মামুন হোসেন।
শ্রেষ্ঠ এএসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন চকবাজার মডেল থানার এএসআই রুহুল আমিন ও মতিঝিল থানার এএসআই হেলাল উদ্দিন।
শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হয়েছেন চকবাজার মডেল থানার এএসআই রুহুল আমিন। অস্ত্র উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন দারুসসালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান। বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে প্রথম হয়েছেন পল্লবী থানার এসআই জহির উদ্দীন আহমেদ।
মাদক উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন পল্টন মডেল থানার এসআই সুজন কুমার তালুকদার এবং চোরাই গাড়ি উদ্ধার করে প্রথম হয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার এসআই শরিফুল ইসলাম।
৯টি গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন একই বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস। অস্ত্র উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহিদুর রহমান।
মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে প্রথম হয়েছেন গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস। তিনি চোরাই গাড়ি উদ্ধার করেও শ্রেষ্ঠ টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন।
আটটি ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন রমনা ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রেফাতুল ইসলাম। শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) হয়েছেন একই জোনের টিআই সরদার মোহাম্মদ তরিকুল আলম। শ্রেষ্ঠ সার্জেন্ট/টিএসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন রমনা ট্রাফিক জোনের পুলিশ সার্জেন্ট মফিজুর রহমান ও মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোনের পুলিশ সার্জেন্ট ইমরান নাজির।
এ ছাড়া ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগসহ ১৫টি বিভাগ ও ১০২ জন কর্মকর্তা এবং ফোর্সকে বিশেষ পুরস্কার দেয়া হয়।