শহরের এক প্রান্তে বিশাল পদ্মা নদী। এখন পানি না থাকায় সামনের ফাঁকা জায়গায় বিস্তীর্ণ বালুচর। বিকেল হলে এখানে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ। এক কাপ কফি কিংবা জুসের সঙ্গে উপভোগ করেন পদ্মার সৌন্দর্য।
আর এই পদ্মাপাড়ে বেড়াতে আসা মানুষের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে রেস্তোরাঁ ‘নোঙর’। নোঙরের প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট।
নিজ এলাকা রাজশাহীতে রেস্তোঁরা ব্যবসা শুরু করেছেন তিনি। নোঙর পুরোদমে এখনও চালু হয়নি। তবে এরই মধ্যে সাড়া ফেলেছে ব্যাপক।
রাজশাহী নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় লালন শাহ পার্কের পাশে পাইলট তার রেস্তোরাঁ করেছেন। খেলা নিয়ে ব্যস্ততার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত সময় দিচ্ছেন নোঙরে।
পদ্মা দেখতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের জন্যই নোঙর করা হয়েছে বলে জানালেন পাইলট।
নিউজবাংলাকে সাবেক এ উইকেটকিপার ব্যাটার বলেন, ‘আমি রাজশাহীতে বড় হয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, বিশ্বের সবচাইতে দর্শনীয় জায়গা যেগুলো আছে, সেগুলো নদীর পাড় বা সমুদ্রের তীরে। আমরা ভাগ্যবান যে রাজশাহী শহরের পাশ দিয়ে নদী বয়ে গেছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র লিটন ভাই রাজশাহীকে একটা সুন্দর নগরী হিসেবে বানাচ্ছেন।
‘নদীর পাড়গুলো নিয়ে আমি মেয়র সাহেবকে একটা আইডিয়ার কথা বলেছিলাম। রেস্টুরেন্ট থাকবে, সুন্দর কফি সার্ভিস পাবে। নদীর যে সুন্দর দৃশ্য, আবহাওয়া সেটি পাবে। উনি ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন। ওনার সহযোগিতায় এটি করছি।’
শুধু রেস্তোরাঁই নয়, এর সঙ্গে থাকা পার্ক নিয়েও বাড়তি পরিকল্পনা আছে পাইলটের। শিশুদের উপযোগী একটি ‘গ্রিন পার্ক’ হিসেবে তিনি এটি প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেন শিশু-কিশোররা কিছুটা সময় আনন্দে কাটাতে পারে।
নোঙরের ব্যবস্থাপক ইকবাল হোসেন জানান, ‘এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়নি। ১৩ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু করা হয়েছে। এখন ছোট পরিসরে এটি চলছে। এখানে স্ন্যাকস, জুস, কফিসহ কয়েকটি আইটেম সরবরাহ করা হচ্ছে। রমজান শেষে ঈদের পর পুরোদমে এটি চালু হবে। ওই সময় এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।’
কলেজছাত্র সইবুর রহমান আর নিলু আক্তার পদ্মার পাড়ে নোঙরে এসেছিলেন শনিবার বিকেলে। সইবুর বলেন, ‘এখানে আজ প্রথম আসলাম। দারুণ লাগল। শুধু খাবারের জন্য নয়, এখানে বসে নদীর দৃশ্য দেখাটা অনেক ভালো লেগেছে।’
নিলু বলেন, ‘কদিন পরে নদীর পানি কিছু বাড়লে আরও সুন্দর লাগবে। এখানে সুন্দর পরিবেশে গল্প করা আর পদ্মার পানি দেখা দুই-ই হবে।’
নোঙরের প্রাথমিক সাফল্যে উচ্ছ্বসিত কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি আয়োজনের জন্য রেস্তোরাঁ বুকিং হয়েছে বলে জানান ব্যবস্থাপক ইকবাল।
তিনি বলেন, ‘ছুটির দিনগুলোতে বসার জায়গা দেয়া যাচ্ছে না। এখন এখানে প্রায় আড়াই শ জনের বসার ব্যবস্থা আছে। ছোটখাটো কিছু ইনডোর অনুষ্ঠান এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। উদ্বোধনের পর এখানে বড় অনুষ্ঠান করার সুযোগ থাকবে।’