প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শ্রমিকের বাড়ি গিয়ে খবর নিতে বলেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘দুই বছর পর আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বেরিয়েছেন। আপনাকে আহ্বান করছি, অনুগ্রহ করে যেকোনো একটা শ্রমিকের বাড়িতে যান। তার দুপুরের খাবারের প্লেটটা দেখেন, কতটুকু খাবার আছে।’
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আজ শ্রমিকের যদি অন্ন না জোটে, কলকারখানা টিকে থাকবে না, দেশ টিকে থাকবে না। আজকে যদি কৃষক তার উৎপাদন না করেন, তবে এই দেশ মানচিত্রে সীমিত হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনার এই ১৫ বছরের সবচেয়ে বড় সফলতা বঙ্গবন্ধুকে পুনঃস্থাপন। তবে বাড়াবাড়ি ভালো না। সবকিছুকেই বঙ্গবন্ধুর কাঁধে দিয়ে দেয়া, এটা সব থেকে ভুল কাজ হবে। মুক্তিযুদ্ধ করেছেন সবাই মিলে। তাজউদ্দীন, ওসমানী, ভাসানী, বাম শক্তিরা প্রত্যেকটা লোক মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে বলেই দেশ স্বাধীন হয়েছে।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশে আট হাজার কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে। অন্যদিকে দরিদ্র মানুষের হাহাকার বাড়ছে। আবার দেশে কুইক রেন্টাল রিনিউ করতে যাচ্ছেন। সর্বনাশ করবেন না। এই কুইক রেন্টালের যে টাকা তাদের পকেটে দেবেন, তার এক-পঞ্চমাংশ টাকা যদি কৃষক-শ্রমিককে দেন, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। বাজারদর কমবে। জনগণ কলকারখানায় হাসিমুখে কাজ করবে। শ্রমিক না বাঁচলে, কৃষক না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না, আপনিও বাঁচবেন না।’
কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে দেশের এক কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড দেয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ধাপ্পাবাজিতে পড়বেন না। এক কোটি কার্ড দেবেন কার মাধ্যমে? আপনার ছাত্রলীগের পান্ডা, আওয়ামী লীগে দুর্নীতিপরায়ণ আওয়ামী লীগার। এ করে কি জনগণের খাদ্য জুটবে? আপনি দুই কোটি পরিবারকে প্রতি সপ্তাহে ১০ সের চাল, ১০ সের আটা, এক সের ডাল, আধা সেট চিনি, আধা লিটার তেল দেন, এটা ন্যূনতম দাবি।’
শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ভাইদের বলছি, রাস্তায় থাকা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আপনাদের আন্দোলন বহাল রাখতে হবে। আপনাদের সঙ্গে আছি। আমরা সম্মিলিতভাবে দুঃশাসন থেকে জনগণকে মুক্ত করব।
‘দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। নিরপেক্ষ বলেন, জাতীয় সরকার বলেন, সর্বদলীয় সরকার বলেন, নতুন করে আইনকানুন প্রয়োগ করে গরিবের ভাগ্য নিশ্চিত না করলে কোনো দেশ টেকে না।’
প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ আহ্বান করছি, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদত্যাগ করে জনগণের কাতারে আসেন। এসে চলেন প্রত্যেক শ্রমিকের বাড়িতে যাই। দেখি তারা কেমন আছে।’