বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাসায় কেমন আছেন খালেদা জিয়া

  •    
  • ১৭ মার্চ, ২০২২ ১১:১৩

বিএনপি নেত্রীর বড় বোন সেলিমা ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খাবারে রুচি নেই, তাও মানানোর চেষ্টা করছেন। প্রায় প্রতিদিনই সময় করে বিদেশে অবস্থানরত বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলেন ছেলের বউ এবং নাতনিদের সঙ্গে। এর বাইরে খুব একটা কারও সঙ্গে দেখা করতে চান না।’

হাসপাতাল থেকে তৃতীয় দফায় বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরার দেড় মাস হয়ে গেল। এই সময়ের মধ্যে তার নতুন করে কোনো শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়নি।

এই সময়ে বিএনপি নেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডকে বৈঠকে বসতে হয়নি। এভারকেয়ার হাসপাতালের একটি চিকিৎসকদল গুলশান-২-এর বাসভবন ফিরোজায় এসে দেখে যান মাঝেমধ্যে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় তার দল সমর্থক চিকিৎসকদের যে দল গঠন করা হয়েছে, তার একজন সদস্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এভারকেয়ারের ডাক্তারদের নিয়েই রুটিন চেকআপ চলছে বাসায়। হাসপাতাল থেকে ফেরার পর আর মেডিক্যাল বোর্ড বসেনি আলাদা করে।’

গুলশানের বাসায় গৃহকর্মী ও সব সময়ের সাহায্যকারী ফাতেমাই এখন সেবা শুশ্রূষার বিষয়টি দেখছেন। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বড় বোন বেগম সেলিমা ইসলাম মাঝেমধ্যে গিয়ে দেখা করছেন, সময় কাটিয়ে আসছেন।

করোনার সতর্কতা হিসেবে বাইরের কেউ এই মুহূর্তে বাসায় যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছেন না। এ জন্য দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও তার সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না।

খালেদা জিয়ার বড় বোন বেগম সেলিমা ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আছেন আগের মতোই। আবার যদি আরও খারাপ কিছু না হয়, সেই দোয়াই করি।’

বাসায় বিএনপি নেত্রীর সময় কাটে কী করে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খাবারে রুচি নেই, তাও মানানোর চেষ্টা করছেন। প্রায় প্রতিদিনই সময় করে বিদেশে অবস্থানরত বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলেন ছেলের বউ ও নাতনিদের সঙ্গে। এর বাইরে খুব একটা কারও সঙ্গে দেখা করতে চান না।’

প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড স্থগিত হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান বিএনপির নেত্রী। পরে আরও চারবার এই মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।

বাড়ি ফেরার এক বছর পর গত বছরের এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন বিএনপি নেত্রী। ৫১ দিন পর বাড়ি ফেরার পর একই বছরের ১২ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত আবার তিনি একই হাসপাতালে যান।

এরপর ১৩ নভেম্বর থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮১ দিন হাসপাতালে থাকেন বিএনপিপ্রধান। সে সময় তার দলের পক্ষ থেকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে নানা কর্মসূচি পালন করে। দাবি করা হয়, দেশের বাইরে না নিলে তাদের নেত্রীকে বাঁচানো যাবে না। কারণ তার যে রোগ, তার চিকিৎসা দেশে নেই।

বেগম খালেদা জিয়ার কী রোগ, সেটি জানানো হয়নি শুরুতে। পরে জানানো হয়, লিভার সিরোসিস হয়েছে তার। আর শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ একবার কোনো রকমে সামাল দেয়া গেছে। এর চিকিৎসা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দু-একটি স্থানে আছে।

খালেদা জিয়ার বাড়ি ফেরার দিন তার চিকিৎসক ফখরুদ্দীন মোহাম্মদ সিদ্দিকী এক ব্রিফিংয়ে বলেন, হাসপাতালে বিপুলসংখ্যক করোনা রোগী আছে, তাই তারা বিএনপি নেত্রীকে সেখানে রাখতে চাইছেন না।

বাসায় ফেরার পর বেগম খালেদা জিয়ার দুটি ছবি এসেছে গণমাধ্যমে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি তার হাতে একটি সনদ তুলে দিতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গিয়েছিলেন ফিরোজায়। সে সময় খালেদা জিয়া সোফায় বসেছিলেন। ফখরুল তার কাছে যান পিপিই পরে।

এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি বাসার বাইরে যান খালেদা জিয়া করোনার টিকার বুস্টার ডোজ নিতে। মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তিনি টিকা দিতে যান নিজের গাড়িতে করে। সেদিন দলের নেতা-কর্মীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। হাসপাতালের কর্মীরা গাড়িতে বসা অবস্থায় তাকে টিকা দেন।

জানতে চাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভালো-মন্দ ঠিক বলা যাচ্ছে না। উনার যে রক্তক্ষরণ হতো, সেটাই দুশ্চিন্তার মূল কারণ ছিল, সেই রক্তক্ষরণ বন্ধ আছে আপাতত। তবে চিকিৎসক বোর্ডের আশঙ্কা, যেকোনো সময়ে এই অবস্থার অবনতি হতে পারে।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাস্থ্যের কথা কী আর বলব? আপনারা সব জানেন। দোয়া করা ছাড়া আর উপায় কী।’

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়াকে।

পরে উচ্চ আদালত সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার সাজা হয় ৭ বছর।

সেই থেকে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারেই থাকতে হয় তাকে। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

২০২০ সালে দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষাপটে তাকে গত বছরের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়।

কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া ওঠেন গুলশানের ভাড়া বাসা ফিরোজায়। এরপর আরও চার দফা বাড়ানো হয় মুক্তির মেয়াদ। সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি কারাগারের বাইরে থাকবেন।

এ বিভাগের আরো খবর