সংযোগ সড়ক থেকে উঁচু করে তৈরি করা হয়েছে সেতু। ফলে এটি যান চলাচলে কাজে আসছে না। এ অবস্থায় হেঁটে সেতুতে ওঠার জন্য এর গোড়ায় তৈরি করা হয়েছে কংক্রিটের সিঁড়ি।
এমন সেতু চোখে পড়বে মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের খাগদাহ্ এলাকায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণ ত্রুটির কারণে লাখ লাখ টাকা খরচ করে তৈরি করা সেতুটি কাজে লাগছে না। এ অবস্থায় যান চলাচল উপযোগী সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খান।
সরেজমিনে দেখা যায়, কেন্দুয়া ইউনিয়নের খাগদাহ্ ও দক্ষিণ কাউয়াকুড়ি গ্রামের মধ্যে প্রবাহিত একটি খালের ওপর পাকা সেতু রয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন ইজিবাইক, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে এসে সেতুর গোড়ায় নামছেন। পরে পশ্চিম পাশে তৈরি কয়েক খাদের সিঁড়ি ভেঙে তারা হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
খাগদাহ্ এলাকার মো. মামুন মাতুব্বর বলেন, ‘নির্মাণ ত্রুটির কারণে দুই গ্রামের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে। বিষয়টি কেন্দুয়ার চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সড়ক ও জনপদ বিভাগকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সেতুটি অন্তত ১৫ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে। তখনই আমরা ঠিকাদারকে অনুরোধ করেছিলাম, ব্রিজটি নিচু করে রাস্তার সঙ্গে মিশিয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু তারা কথা শোনেনি। পরে কেন্দুয়ার চেয়ারম্যান শাহ্ মোহাম্মদ রায়হান কবির নিজ অর্থে ব্রিজের নিচে সিঁড়ি করে দিয়েছেন। এখন সিঁড়ি দিয়ে ব্রিজে চলাচল করতে পারি। তবে ব্রিজে কোনো যানবাহন উঠতে পারে না। ফলে দুই পাশে রাস্তা থাকার পরেও যান চলাচলে কোনো কাজে লাগছে না।’
দক্ষিণ কাউয়াকুড়ি গ্রামের নূরুল হক হাওলাদার জানান, ‘ব্রিজের কারণে আমাদের ভোগান্তি আরও বাড়ছে। দুই তিন কিলোমিটার পথ হাঁটতে হয়। কোনো রিকশা-ভ্যানে চলাচল করতে পারি না। কেউ অসুস্থ হলে কাঁধে করে হেঁটে আসতে হয়। অথচ এই ব্রিজ না থাকলে নতুন করে রাস্তা উপযোগী ব্রিজ করা হতো। এই গলার কাঁটা যেন সরিয়ে নিয়ে আমাদের মুক্তি দেয়।’
কেন্দুয়ার ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ মোহাম্মদ রায়হান কবির বলেন, ‘দীর্ঘদিন আগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। তখন রাস্তার চেয়ে বেশি উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে এটি। যে কারণে কোনো যানবাহন এর ওপরে উঠতে পারেনি। মানুষ যেন হেঁটে সেতুর ওপরে যেতে পারে সে জন্য সিঁড়ির ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকেও জানানো হয়েছে।’
মাদারীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফ আলী খান বলেন, ‘সেতুটি পরিদর্শন করে যান চলাচল উপযোগী করা যায় কি না, সেটা দেখা হবে। আর তখন হয়তো খালে পানি প্রবাহ বেশি ছিল, তাই তুলনামূলক বেশি উচুঁ করে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। আর সংযোগ সড়ক অনেক ক্ষেত্রে দুই রাস্তার মুখোমুখি হলে কিছুটা সমস্যা হতেও পারে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’
কবে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি মাদারীপুর নতুন জেলায় যোগ দিয়েছি। সে কারণে সেতুর বিষয়ে তেমন তথ্য দিতে পারব না। কাগজপত্র ঘেঁটে বলতে হবে। তবে সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে আনুমানিক ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকা।’