বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জ্বালানি তেলের দাম এক ধাক্কায় ১০০ ডলারের নিচে

  •    
  • ১৫ মার্চ, ২০২২ ১৮:২৮

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে নতুন করে আলোচনার উদ্যোগ এবং চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে তেলের চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কায় দর পড়ছে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমছেই। সোমবারের পর মঙ্গলবারও বড় পতন হয়েছে তেলের দরে; নেমে এসেছে ১০০ ডলারের নিচে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল তেলের দাম; একপর্যায়ে প্রতি ব্যারেলের দর ১৩৯ ডলারে গিয়ে ঠেকেছিল। সপ্তাহখানেক ১০৮ থেকে ১২০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করে। দুই দিনে ১৫ শতাংশের মতো দরপতনে দুই ধরনের অপরিশোধিত তেলের দামই ১০০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেল ৮ দশমিক ১ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ৯৫ ডলার ৩০ সেন্টে নেমে এসেছে। ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দর প্রায় একই পরিমাণ কমে ৯৯ ডলার ৫০ সেন্টে বিক্রি হচ্ছে।

সোমবার ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট তেল ব্যারেলপ্রতি ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ কমে ১০২ ডলার ৫৫ সেন্টে নেমে এসেছিল। ব্রেন্ট তেলের দর প্রায় একই পরিমাণ কমে ১০৬ ডলার ১৯ সেন্টে বিক্রি হয়।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে নতুন করে আলোচনায় বসার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার খবরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামের ঊর্ধ্বগতি প্রশমিত হয়েছে। এ ছাড়া চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় লকডাউনের আশঙ্কায় তেলের চাহিদা কমে যেতে পারে, এমন খবরে তেলের দর কমছে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার পর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ৪০ শতাংশের মতো বেড়েছিল। এখন তা নিম্নমুখী হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।

বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক এবং আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ইউবিএস গ্রুপের বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেন, ‘ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে নতুন আলোচনার পাশাপাশি চীনে নতুন করে লকডাউন শুরু হতে পারে, এমন খবরে তেলের দাম নিম্নমুখী হয়েছে।’

চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করে দেশটি। ২০২০ সালের শুরুতে চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে দেশটিতে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। সাংহাই থেকে শেনজেন পর্যন্ত নতুন করে প্রাদুর্ভাবের সূত্রপাত হয়েছে। ১৩ মার্চ ১ হাজার ৪৩৭ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

জ্বালানি তেল উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পর তৃতীয় বৃহত্তম দেশ রাশিয়া। প্রতিদিন দেশটি প্রায় ৫০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করে।

এই তেলের অর্ধেকের বেশি যায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। যুক্তরাজ্যের চাহিদার ৮ শতাংশ তেল রপ্তানি করে রাশিয়া।

ইউক্রেন সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে রেখে অবশেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে হামলা চালানো শুরু করে রাশিয়া। প্রতিরোধ করছে ইউক্রেনের সেনারাও। এরই মধ্যে তিন দফা ইউক্রেন-রাশিয়ার বৈঠক হয়েছে; তবে কার্যত যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

যুদ্ধ শুরুর পরই পশ্চিমাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করে। দেয়া হয় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও।

একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেলসহ নানা পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন আতঙ্কে গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট তেলের দাম কমতে কমতে ৬৬ ডলারে নেমে গিয়েছিল। ব্রেন্ট তেলের দর কমে হয়েছিল ৬৮ ডলার।

তিন-চার দিন ওই একই জায়গায় স্থির ছিল তেলের বাজার। কিন্তু ওমিক্রন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়লেও করোনার নতুন ওই ধরনে আক্রান্ত হয়ে মানুষ খুব একটা মারা না যাওয়ায় এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক বেশ খানিকটা কেটে যায়। এতে বিশ্বে তেলের চাহিদা বাড়বে–এ সম্ভাবনাকে সামনে রেখে আবার বাড়তে শুরু করে দাম।

২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। করোনা মহামারির মধ্যেও টানা বেড়েছে তেলের দাম। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় তা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়।

গত বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে দুই ধরনের তেলের দামই ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। সে সময় বাংলাদেশ সরকারও ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ৮০ টাকা নির্ধারণ করে।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে গড়ে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ছিল ৪২ ডলার। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৪৯ ডলার। এরপর থেকে গড়ে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ফেব্রুয়ারি মাসে ৫৩ ডলার, মার্চে ৬০, এপ্রিলে ৬৫, মে মাসে ৬৪, জুনে ৬৬, জুলাইয়ে ৭৩ এবং আগস্টে ৭৪ ডলার। অক্টোবর মাসে এই দাম ৮৫ ডলারে ওঠে।

এ বিভাগের আরো খবর