দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগসহ ১১ মামলার শুনানির তারিখ আবার পিছিয়েছে। আদালতের নতুন নিদ্ধান্ত, এই শুনানি হবে আগামী ৮ জুন।
মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে মামলাগুলোর শুনানির কথা ছিল।
কিন্তু বেশিরভাগ মামলার কার্যক্রম হাইকোর্ট স্থগিত করেছে জানিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সময় আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন নাকচ করে নতুন তারিখ ঠিক করে।
মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় করা নাশকতার আটটি, যাত্রাবাড়ী থানার দুটি ও রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে শুনানির কথা ছিল। অপর ১০ মামলায় চার্জ গঠনের শুনানি ছিল।
বিষয়টি খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী জিয়াউদ্দিন জিয়া নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে করার অভিযোগে ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি করা হয়।
যাত্রাবাড়ী থানার মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের একটি বাসে পেট্রল বোমা হামলা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। পরে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম নামের এক যাত্রী।
ওই ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন থানার উপ-পরিদর্শক এসআই কে এম নুরুজ্জামান।
ওই বছরের ৬ মে খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক বশির আহমেদ।
২০১৫ সালে দারুস সালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে আটটি মামলা দায়ের করা হয়। এই আট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়।
২০১৭ সালের বিভিন্ন সময়ে মামলাগুলোয় অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। সবগুলো মামলায় খালেদা জিয়াকে পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। পরে খালেদা জিয়া মামলাগুলোয় আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয় বিচারিক আদালত। সাজার বিরুদ্ধে আপিল করলে উচ্চ আদালত অক্টোবরে সাজা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে।
অক্টোবরেই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাজা হয় ৭ বছর।
দুই বছরেরও কিছু বেশি সময় কারাগারে থাকার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন বিএনপি নেত্রী।
সাময়িক এই মুক্তির মেয়াদ ছিল ৬ মাস। পরে ধাপে ধাপে তা আরও তিন দফা বাড়ানো হয়, যার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে চলতি মাসেই।
বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও একাধিক মামলা রয়েছে। বেশিরভাগ মামলাই অভিযোগ গঠন পর্যায়ে অথবা স্থগিত আছে।