রাজধানীর কোতোয়ালি থানা হেফাজতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়। বিষয়টি সোমবার নিশ্চিত করেন মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।
আদালত কোতোয়ালি থানার তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করা মামলা তদন্তে পিবিআইকে নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি মামলার বাদী স্বর্ণ ব্যবসায়ী রাজিব কর রাজুকে সাত দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার আদেশ দিয়েছে। এ জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী রাজিব কর রাজু গত ২ মার্চ আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে আদেশ পরে দেয়া হবে বলে জানিয়ে দেয়।
মামলার আসামিরা হলেন- কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান ও আব্দুল জলিল এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফরিদ ভূঁইয়া।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে বাদীর গোয়ালনগরের বাসায় সিলিং ভেঙে সাদা পোশাকে ঢোকেন এসআই মিজান ও এএসআই ফরিদ ভূঁইয়া। তারা রাজুকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন।
পুলিশ এ সময় বাসা তল্লাশি করে ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৩৩৮ টাকা দামের স্বর্ণ জব্দ করে। তারা নগদ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা ছাড়াও মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে যায়।
থানায় নিয়ে রাজুকে নির্যাতন করা হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে ফের থানায় নেয়া হয়। তখন রাজুর কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। টাকা না পেলে তাকে অস্ত্র ও মাদক মামলায় আসামি করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
রাজুর পরিবার দুই দফায় দুই লাখ টাকা দিলেও নির্যাতন থেকে মুক্তি মেলেনি। পরে রাজু অসুস্থ হয়ে প্রায় এক বছর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে রাজু কোতোয়ালি থানায় গেলে পুলিশ মামলা নিতে রাজি হয়নি। তখন অভিযোগটি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের কাছে দেয়া হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী। এ অবস্থায় আদালতে মামলার জন্য আবেদন করা হয়।