পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির ১৩০টি অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আগামী তিন দিনের মধ্যে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণের আইনের ১৪ ও ১৯ ধারা অনুসরণ করে অবৈধ ইটাভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আদালতের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আদেশের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পার্বত্য তিন জেলায় অবৈধ ইটভাটা অপসারণের জন্য জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আবেদন করেছিলাম। আদালত সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে সাত দিনের মধ্যে সেগুলো অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুসারে জেলা প্রশাসন তা বন্ধ করেনি। দুই-চারটি বন্ধ করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে, কিন্তু তারা আবার এগুলো চালাচ্ছেন।
‘এসব নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে এনেছি। পাশাপাশি আদালত আরেকটা নির্দেশনা দিয়েছিলেন, মোট কতটি অবৈধ ইটভাটা আছে এই তিন জেলায়, তার তালিকা দাখিলের জন্য। সে তালিকা আজকে জেলা প্রশাসন থেকে আদালতে দাখিল করা হয়েছে, যেখানে চট্টগ্রামের তিন জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটিতে ১৩০টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে।’
আইনজীবী বলেন, ‘আজকে আদালত আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে আদেশ দিয়েছেন আগামী তিন দিনের মধ্যে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণের আইনের ১৪ ও ১৯ ধারা অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন। এ ধারায় বলা হয়েছে, যারা এ রকম অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে দুই বছর পর্যন্ত সাজা আছে। ১৩০টি ইটভাটা ছয় সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে আদালত প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।’
এর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার সব অবৈধ ইটভাটা সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল আদালত।
খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলায় বিভিন্ন ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া চলছে এবং পাহাড় কেটে মাটি ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভাটার জ্বালানি হিসেবে বনের গাছ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে হাইকোর্টে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দেয়।