মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে সাতক্ষীরার আশাশুনি থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভূক্ত আসামি ।
আশাশুনির চাপড়া এলাকা থেকে রোববার দুপুরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোস্তাফিজুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মজিবর রহমান ধনু ও আবুল হোসেন।
এসপি জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ওই দুইজনের নামে অভিযোগপত্র দেয়া হলে রোববার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মজিবরকে আশাশুনির পাইথালী এলাকার হাসেম রাজাকারের বাগানবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। আর আবুল হোসেনকে চাঁপড়ায় তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পরপরই সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে তাদের পাঠানো হয়েছে বলে জানান এসপি মোস্তাফিজুর।
পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দীন সানা জানান, যুদ্ধের সময় আশাশুনি গ্রামের গোরাঠাকুরকে হত্যা ও তার মেয়েকে ধর্ষণ করে গুম করার অভিযোগ রয়েছে মজিবর, আবুল হোসেন ও লিয়াকত কমান্ডারের বিরুদ্ধে। এছাড়া চাপড়ার আনিসুর রহমান, শরাফপুর গ্রামের মেঘনাথ দাস, তারাপদ দাস ও কেষ্টপদ দাসকে গুলি করে হত্যার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে আছে।
আলাউদ্দীনই ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন। সেটি পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেয়ার পরামর্শ দেয় আদালত।
আলাউদ্দীন আরও জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনি মামলার নথিপত্র জমা দেন। প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে ট্রাইব্যুনালে সরকার মামলা করেন; তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার পরিদর্শক আমিনুর রশিদ, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রাজিয়া সুলতানা চমন।
ট্রাইব্যুনালের সাতক্ষীরা জেলার সাক্ষ্য সমম্বয়কারি শাহ্ আলম জানান, তদন্ত কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শন ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ট্রাইবুনালে অভিযোগপত্র দেন। তবে ইতোমধ্যে আসামি লিয়াকত কমান্ডার গত বছর মারা যাওয়ায় তাকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়।