নতুন নির্বাচন কমিশন যতই ভালো কাজ করুক না কেন, তাদেরকে গালি খেতেই হবে বলে মনে করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এই বিষয়টি নিয়ে না ভেবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
রোববার নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
সাবেক সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ ও পরদিন দায়িত্ব গ্রহণ করে। এখন পর্যন্ত তাদেরকে কোনো ভোট পরীক্ষা দিতে হয়নি।
আগামী নির্বাচনের কর্মকৌশল নির্ধারণে কমিশন প্রথমবারের মতো সংলাপে বসেছে। প্রথমেই ডাকা হয় শিক্ষাবিদদের। তবে এই উদ্যোগে খুব বেশি সাড়া আসেনি। কমিশন আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ৩০ জনকে। এর মধ্যে ১৩ জন সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করে আলোচনার জন্য গেছেন।
জাফর ইকবাল নির্বাচন কমিশনকে বলেন, ‘আপনারা যত ভালো কাজই করেন না কেন, গালি আপনাকে খেতেই হবে।
‘গালি নিয়ে ভাববেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে যেন বলতে পারেন, আমি কাজটা ঠিকমতো করতে পেরেছি। এটা গুরুত্বপূর্ণ।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নিয়েও কথা বলেন জাফর ইকবাল। বলেন, ‘ইভিএম সম্পর্কে বলা হচ্ছে এটা নাকি অনেক হাই লেভেলের টেকনোলজি৷ আসলে তা না। এটা খুবই লো লেভেলের টেক। এখন তো অনেক হাইটেক জিনিসপত্র আছে। আমাদের ভার্সিটির স্টুডেন্টরা ইভিএম নিয়ে প্রজেক্ট করে।’
নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ হিসেবে দেখতে চান না বলেও জানান এই শিক্ষাবিদ। বলেন, ‘আমি নিরপেক্ষতাকে ভয় পাই। আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন এমন নির্বাচন হবে যেখানে জয়ী দল এবং হারা দল- দুটোই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক হবে।’
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে ভাবারও পরামর্শ দেন জাফর ইকবাল। বলেন, ‘দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ বিদেশে থাকে। তারাও দেশ নিয়ে ভাবে। তারা কীভাবে ভোট দিতে পারে সেটা দেখতে হবে।’
জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে জটিলতার সমাধানের পরামর্শও দেন এই শিক্ষাবিদ। বলেন, ‘ইদানীং দেখা যাচ্ছে অনেক জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল হচ্ছে। এটার জন্য অনেকে অনেক টাকা খরচ করেও সমাধান পাচ্ছে না। কমিশন এটা দেখলে ও সমস্যার সমাধান করলে একটা পজিটিভ ইমপ্রেশন পড়বে।'
অধ্যাপক সাদেকা হালিম, মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার, আবদুল মান্নান চৌধুরী, ওয়ার্ল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মফিজুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, আখতার হোসেন, আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, জাফর ইকবাল, বোরহান উদ্দিন খান এবং লায়লাফুর ইয়াসমিনও এই সংলাপে অংশ নেন।
পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই সংলাপ হবে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও সংলাপ হবে সবার পরে। এরপর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে ইসি।