বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাজেটের সময় আন্দোলনের নাটক করেন মালিকরা: গবেষণা

  •    
  • ১২ মার্চ, ২০২২ ১৭:৩৯

গবেষণায় দেখা গেছে, বিড়ি শ্রমিকদের এই আন্দোলনে প্রকৃত লাভবান হন বিড়ি মালিকরাই। ২০১৯ সালে বিড়ি শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে বিড়ির ওপর বর্ধিত কর প্রত্যাহার করে নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। ফলে এক হাজার শলাকা বিড়িতে মালিকদের আয় বৃদ্ধি পায় ২৮ টাকা অথচ শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হয় প্রতি হাজারে মাত্র ৬ টাকা। যে কারণে গত তিন অর্থবছরে প্রতি এক হাজার শলাকায় মালিকদের মুনাফা বেড়েছে ১১৮ দশমিক ৮ টাকা।

প্রতিবার বাজেট ঘোষণার সময় এলেই শ্রমিকদের দিয়ে বিড়ির ওপর কর বৃদ্ধি ঠেকাতে আন্দোলনের নাটক সাজান বিড়ি কোম্পানির মালিকরা। বিড়ি শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণ অনুসন্ধানে একটি গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে শনিবার গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) এই গবেষণার ফল প্রকাশ করে।

লালমনিরহাট, রংপুর, পাবনা এবং কুষ্টিয়া জেলায় গত বছর এই গবেষণা পরিচালিত হয়, যা আজ প্রকাশ করা হয়।

গবেষণায় বিড়ি শ্রমিক, নেতা এবং স্থানীয় সুশীল সমাজ ও সংগঠন থেকে উদ্দেশ্যমূলক নমুনায়নের ভিত্তিতে ৯২ জনকে এই গবেষণার জন্য নির্বাচন করা হয়। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এ গবেষণায় সহযোগিতা করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিড়ি শ্রমিকদের এই আন্দোলনের দায়িত্বে থাকে মালিকপক্ষের কিছু লোক। এ ছাড়া বিড়ি কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার ও এজেন্টরা যুক্ত থাকেন। বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচিগুলোয় তথাকথিত শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কোম্পানির লোকজনও বক্তব্য দেন। শ্রমিকদের কাজ শুধু রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা।

মূলত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিড়ি শ্রমিকদের ঢাকায় আনেন বিড়ি কোম্পানির মালিকরা। আন্দোলনে অংশ নেয়ার জন্য শ্রমিকদের পরিবহন, খাবারসহ সব ব্যয় মালিকপক্ষ বহন করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিড়ি শ্রমিকদের এই আন্দোলনে প্রকৃত লাভবান হন বিড়ি মালিকরাই। ২০১৯ সালে বিড়ি শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে বিড়ির ওপর বর্ধিত কর প্রত্যাহার করে নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। ফলে এক হাজার শলাকা বিড়িতে মালিকদের আয় বৃদ্ধি পায় ২৮ টাকা অথচ শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হয় প্রতি হাজারে মাত্র ৬ টাকা। যে কারণে গত তিন অর্থবছরে প্রতি এক হাজার শলাকায় মালিকদের মুনাফা বেড়েছে ১১৮ দশমিক ৮ টাকা।

গবেষণার সুপারিশ

গবেষণায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিড়ির ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে বিড়ির ওপর উচ্চহারে করারোপ করা, বর্ধিত কর থেকে আহরিত রাজস্ব বিড়ি শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যয় করা, কর আইন ও শ্রম আইন, বিশেষত শিশুশ্রম ব্যবহার-সংক্রান্ত আইন প্রতিপালনে বিড়িশিল্পকে কঠোর মনিটরিংয়ের আওতায় আনা এবং বিড়ি শিল্প মালিকদের বিকল্প ব্যবসায় যেতে সরকারের পক্ষ থেকে ঋণসহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান প্রভৃতি সুপারিশ করা হয়েছে।

গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অর্থনীতিবিদ ও জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘গবেষণার ফলাফলের সঙ্গে আমি একমত। এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ খাত। সরকারের উচিত হবে এই শিল্পকে নিরুৎসাহিত করা।’

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে সিটিএফকের উপদেষ্টা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শ্রমিক শোষণের বড় উদাহরণ বিড়িশিল্প। সাজানো আন্দোলনে প্রকৃত লাভবান হয় মালিকপক্ষই।’

আত্মার কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গবেষণার ফল তুলে ধরেন প্রজ্ঞার হাসান শাহরিয়ার।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমদ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খোন্দকার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীরসহ অনেকে।

এ বিভাগের আরো খবর