কিশোরগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার অভিযোগে করা মামলায় অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পৌর শহরের পুরান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার ৫০ বছর বয়সী ওই ব্যবসায়ীর নাম খাইরুল ইসলাম রানা। তিনি পৌর শহরের পুরান থানা এলাকার বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গিয়াসউদ্দিন বুধবার রাতে রানার নামে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে শহরের ইসলামিয়া সুপার মার্কেটসংলগ্ন লিটল ফ্রেন্ডস কিন্টারগার্ডেন স্কুলের সামনে ব্যবসায়ী রানা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গিয়াসউদ্দিনের গ্রামের বাড়ি তাড়াইল উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নে। তিনি ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন সকালে নাতিকে নিয়ে লিটল ফ্রেন্ডস কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে যাই। সেখানে রানার স্ত্রী পপিকে দেখতে পেয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি তোমার স্বামীর যে ঝামেলা ছিল সেটা মিটেছে কি না। এ সময় পপি তাকে কোনো উত্তর না দিয়ে মোবাইলে কাকে যেন ফোন দেয়।
‘একটু পরেই তার স্বামী রানা এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে। আমি প্রতিবাদ করলে সে আমাকে কিলঘুষি মারে। একপর্যায়ে আমার শার্টের কলার ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রানার সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে কোনোমতে প্রাণে রক্ষা পাই। পরে আমার ডাক-চিৎকারে উপস্থিত লোকজন আমাকে তার হাত থেকে রক্ষা করে। এরপর চলে যাওয়ার সময় সে আমাকে সুযোগমতো পাইলে খুন করে ফেলবে বলেও হুমকি দেয়।’
তার ছেলে মাঈনউদ্দিন রাপ্পি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বাসার গলিতে এক নারীর সঙ্গে রানার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে রানা এবং তার স্ত্রী পপির মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা হতো। এই ঝামেলার কারণে পপি বেশ কয়েকবার আমাদের বাসায় এসে আমার বাবার কাছে বিচার চেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এখনো কোনো সমস্যা আছে কি না, ঘটনার দিন বাবা পপিকে সে বিষয়েই জিজ্ঞেস করেছিল। এরপরই রানা এসে আমার বাবাকে জিজ্ঞেস করে আমার স্ত্রীর সঙ্গে তোর কীসের কথা? একপর্যায়ে বাবাকে গালাগালি শুরু করে সে। এর প্রতিবাদ করায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবার গায়ে হাত তোলে।’
এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার বিকেলে রানাকে ফোন করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করেন।
নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। তার সঙ্গে আমার তর্ক হয়েছে এইটুকু সত্য। কিন্তু তাকে আমি গালিও দিইনি, তার শরীরে হাতও তুলিনি। বরং তার ছেলে আমাকে মারতে এসেছে।’
এ বিষয়ে ওসি মোহাম্মদ দাউদ বলেন, ‘মামলার পরই রানাকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের পুরান থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’