যে রাজনীতি নারীর পক্ষে, মানুষের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে সেই রাজনীতি বেছে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সব সিদ্ধান্তের সঙ্গে রাজনীতি জড়িত জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকের মধ্যে এ রকম ধারণা আছে- ‘আমি রাজনীতিতে থাকি না’। কিন্তু আমরা যা কিছু করছি, তার সব সিদ্ধান্তই নিচ্ছে রাজনীতি। আমি যদি রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে রাখি, যদি ভাবি আমি ওর কাছে যাবো না। তার মানে হচ্ছে, আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি না। আমি সচেতন না। তবে সবাইকে রাজনৈতিক দল করতে হবে এমন না। তবে সচেতন হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী। সেই নারীকে নিজের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে রাজনীতিকে বেছে নিতে হবে। এই রাজনীতি নারীর পক্ষে, মানুষের পক্ষে। যে রাজনৈতিক দল অসাম্প্রদায়িক সেই রাজনীতিকেই বেছে নিতে হবে। আজ ২০২২ সালের যে বাংলাদেশ পেয়েছি, তা এগিয়ে নিতে হবে বহদূর।’
যে রাজনীতি নারীর পক্ষে, মানুষের পক্ষে, অধিকারের পক্ষে, বৈষম্যহীনতায় বিশ্বাস করে, অসাম্প্রদায়িক; নারীকে সেই রাজনীতিই বেছে নিতে হবে বলে জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক, নারীবান্ধব গণমানুষের রাজনীতি আছে বলেই ২০২২ সালে নারীদের অবস্থা এমন। যদি তা না হতো, তাহলে ২০০১-০৬ সালে যে বাংলাদেশ পেয়েছিলাম, দেশের অবস্থা তেমন বা তার চেয়ে বেশি খারাপ হতো।’
নারীর অধিকার ও রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে রাজনীতি মানুষের অধিকারের স্বীকৃতি দেয়, নারীর অধিকারকে মানবাধিকারের স্বীকৃতি দেয় আমার সেই রাজনীতিই দরকার। যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে, নারী নির্যাতন করেছে, যারা সেই অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা তো সরাসরি নারীবিদ্বেষী।’
১৯৯৭ সালের নারী নীতিমালার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ১৯৯৭ সালের নারী নীতির মৌলিক কতগুলো বিষয় ছিল। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকারসহ বিভিন্ন মৌলিক বিষয় ছিল। কিন্তু ২০০৫ সালে রাতের অন্ধকারে সেই নারী নীতিকে একেবারে ধ্বংস করে দেয়া হলো। কারণ তখন যে সরকার, সেই সরকারের মূল অংশে ছিল একটি মৌলবাদী দল। মূল দলটিও নারী বিদ্বেষী, তার যথেষ্ট প্রমাণও আছে।’
দীপু মনি বলেন, ‘পৃথিবী থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করতে হবে। একজন নারীর চারপাশে একটি শক্ত দেয়াল তৈরি হয়। এটি ভেঙে বের হওয়াই একজন নারীর জন্য যুদ্ধ। অধিকাংশ মেয়েরা দেয়ালটা ভেঙে বের হতে পারে না। দেয়ালটাকে ভাঙার জন্য নারীকে সাহস জোগাতে হবে। নারীকে তার অন্তর্নিহিত শক্তিটাকে উপলদ্ধি করতে হবে। সেই শক্তি দিয়ে নারীকে সব জয় করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।