বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ছাত্রলীগ না করায় মারধর: ৪ জন বহিষ্কার

  •    
  • ৮ মার্চ, ২০২২ ০১:৩৮

প্রক্টর জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটি চারজনকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটি বাস্তবায়ন করবে। বহিষ্কারকৃরা হলেন, টিপিএস বিভাগের সামিউল হক হিমেল, আবু নাঈম আব্দুল্লাহ, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা বিভাগের মোমেন সরকার ও তানভির আহমেদ তুহিন।

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ না করায় এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় চরজনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।

সোমবার রাত ১০টার দিকে তাদের সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটি।

বহিষ্কারকৃরা হলেন, টিপিএস বিভাগের সামিউল হক হিমেল, আবু নাঈম আব্দুল্লাহ, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা বিভাগের মোমেন সরকার ও তানভির আহমেদ তুহিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সোমবার বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটি আলোচনায় বসে। রাত ১০টার দিকে তাদেরকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কেনো স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চেয়ে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। হলে তাদের সিট বাতিল করা হয়েছে।

প্রক্টর জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটি চারজনকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটি বাস্তবায়ন করবে। এছাড়া স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সোলায়মান নাঈমের বিষয়ে সতর্কীকরণপত্র ইস্যু করা হবে। তার হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্তও হয়েছে।

বৈঠকে পাশাপাশি লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা বিভাগের সারজীল হাসান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মো. পলাশ এবং ইলেক্ট্রিকেল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স সায়েন্স বিভাগের জোবায়ের আহমেদ সাব্বিরকে সতর্কীকরণপত্র ইস্যুর সুপারিশ করা হয়।

সিট বাতিল করা হয়েছে, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের মো. ছনিক মিয়া, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মো. মোজাহিদ হোসেন সজিব ও পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের মো. সৌরভ হোসেনের।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ওয়ালিদ নিহাদ নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। মারধরের শিকার নিহাদ লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

নিহাদ নিউজবাংলাকে জানান, ঘটনার দিন রাত দেড়টার দিকে তাকে ডেকে নেয়া হয় বঙ্গবন্ধু হলের একাত্তর ব্লকের ৩২৪ নম্বর কক্ষে। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের পলাশ তাকে ডেকে নেন। রুমে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাকে থাপ্পড় মারেন নাট্যকলা বিভাগের হিমেল। এরপর তুহিন, মুমিন, অ্যালেক্স সাব্বির, তানভীরসহ অন্তত ১০ জন তাকে লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন। বুকের ওপর দাঁড়িয়ে মেরেছেন ফোকলোর বিভাগের আবু নাঈম আব্দুল্লাহ। রাত আড়াইটার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ না করার কারণে আমাকে ডাকা হয়। পারিবারিক সমস্যার কারণে আমার রাজনীতি করা সম্ভব নয়। আমি পড়াশোনা নিয়েই থাকতে চাই। কিন্তু আমাকে ক্যাম্পাসে থাকতে হলে ছাত্রলীগ করতে হবে বলে হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো শিক্ষকের কাছে বিচার চাইতেও নিষেধ করা হয়।

‘বেশি কথা বললে ক্যাম্পাসে থাকতে পারব না, বুয়েটের আবরার ফাহাদের মতো মরতে হবে- এমন হুমকি দেয়া হয়েছে’, বলেন তিনি।

নিহাদ দাবি করেন, নির্যাতনের একপর্যায়ে তার বুকে রামদা ধরা হয়। তাকে হুমকি দিয়ে ফেসবুকে খালেদা জিয়ার ছবি আপলোড করানো হয়। তখন একটি ভিডিও ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে জোরপূর্বক তাকে দিয়ে বলানো হয়, ‘২০২৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, তারেক জিয়া দেশে ফিরবে। তখন ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্রলীগের কুত্তা থাকবে না।’

ঘটনার পরদিন নির্যাতনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানের কাছে।

ওই দিনই চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের প্রভোস্ট মাসুম হাওলাদারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ছাত্র উপদেষ্টা তপন কুমার সরকার ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা বলা হয়।

শিক্ষার্থী নির্যাতনের পরদিন দুপুর থেকেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা শুরু হয়। এ সময় প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন।

গত মঙ্গলবার বিকেলেও শতাধিক শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ সাত দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল ভাস্কর্যের সামনে গত বুধবার সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন করেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটির বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।

এ বিভাগের আরো খবর