চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে মিথ্যা তথ্য দিয়ে উচ্চ শুল্কহারযুক্ত পণ্য আমদানির অভিযোগে কাস্টমসের কর্মকর্তাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তিনটি আলাদা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ১০৫ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ আনা হয়েছে।
শনিবার দপুরে দুদক প্রধান কার্যালয়ের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত-১ এর উপ পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে মামলাগুলো করেন।
দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক নাজমুস সাদাত বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
একটি মামলায় ১২ জনকে আসামি করে বলা হয়, ২০১৮ সালের মে থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ৫টি চালানে স্টেইনলেস স্টিল পণ্য ও চাইনিজ টায়ারের ঘোষণা দিয়ে আমাদানি করা উচ্চ শুল্কের সিগারেট খালাস করেন। এর মাধ্যমে সরকারের ৬৫ কোটি ৬৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৭৫ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তারা আত্মসাৎ করেছেন।
আরেকটি মামলায় ৮ জনকে আসামি করে বলা হয়, ২০১৮ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩টি চালানে বোতাম এবং সেফটি পিনের ঘোষণা দিয়ে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে উচ্চ শুল্কহারের সিগারেট খালস করেন। এর মাধ্যমে তারা সরকারের ৩২ কোটি ২৭ লাখ এক হাজার ৬৪৫ টাকা রাজস্ব আত্মসাৎ করেন।
তৃতীয় মামলায় ১০ জনকে আসামি করে বলা হয়, ২০১৮ সালের মে থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২টি চালানে জিপার এবং চাইনিজ টায়ার ঘোষণা দিয়ে উচ্চ শুল্কহারের সিগারেট এনে খালাস করে। এর মাধ্যমে তারা সরকারের ১৬ কোটি ১৪ লাখ ৩৭ হাজার ৭৫০ টাকা আত্মসাৎ করেন।
তিনটি মামলায় ৩০ জন আসামি হলেও অভিযুক্ত মোট ১৬ জন। কারণ এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে তিনটি মামলায়ই অভিযুক্ত করা হয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- মেসার্স জারার এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান, সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স চাকলাদার সার্ভিসের মো. হাবিবুর রহমান অপু, গ্রাহক আব্দুল গোফরান, হামীম গ্রুপের কম্পিউটার অপারেটর জহুরুল ইসলাম, গ্রাহক আবুল কালাম, কাস্টম হাউজের সহকারী প্রোগ্রামার কামরুল হক, কাস্টম হাউজের প্রাক্তন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার জনি, প্রাক্তন রাজস্ব কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম, রাজস্ব কর্মকর্তা সুলতান আহম্মদ, কম্পিউটার অপারেটর ফিরোজ আহমেদ, উচ্চমান সহকারী আব্দুল্লাহ আল মাছুম, অফিস সহায়ক সিরাজুল ইসলাম, সিফাত ট্রেডিংয়ের মালিক সালাউদ্দিন টিটু, মুভিং ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক আব্দুল হান্নান দেওয়ান এবং মিজানুর রহমান চাকলাদার ও মফিজুল ইসলাম লিটন।
দুদকের উপ-পরিচালক নাজমুস সাদাত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কমিশনের অনুমতিক্রমেই মামলাগুলো করা হয়েছে। কমিশনই মামলগুলো তদন্তের ব্যবস্থা করবে।’