বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাদিসুরের লাশ পাবে কি পরিবার

  •    
  • ৩ মার্চ, ২০২২ ১৩:০৯

বিএসসির পীযূষ দত্ত বলেন, ‘এ মুহূর্তে হাদিসুরের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা প্রায় অনিশ্চিত। জাহাজও চলাচলের উপযোগী নয়। ফলে তার লাশটি ফ্রিজারে প্রিজার্ভ করে রাখা হয়েছে। ওই দেশে কিংবা অন্য কোথাও দাফনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।’

কয়েক দিন ধরে জাহাজে আটকা। উদ্বিগ্ন স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা। দেশে ফেরা নিয়ে উৎকণ্ঠা-দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানেরও। তবে সেটা খুব সহজে প্রকাশ করতে চাইছেন না তিনি।

বুধবার রাতে অন্য প্রান্তের মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দেয়। তাকে নিজের অভিব্যক্তিটা জানানো জরুরি ছিল হাদিসুরের। নেটওয়ার্ক পেতে ইঞ্জিনরুম থেকে নেভিগেশন ব্রিজে আসেন তিনি। কিন্তু কে জানত তার সঙ্গে আর কোনো দিনই কথা হবে না প্রিয়মুখগুলোর।

রকেট হামলায় নিহত হাদিসুরের মরদেহ একনজর দেখতে আকুতি তার মা ও স্বজনদের। তাদের এখন একটাই চাওয়া, হাদিসুরের লাশটি বাড়িতে আনা হোক।

তবে বর্তমানে মরদেহসহ জাহাজেই অবস্থান করছেন জাহাজের বেঁচে যাওয়া নাবিক-ক্রুরা। নিরাপত্তার কারণে জাহাজ থেকে অন্য কোথাও যেতে পারছেন না তারা। ফলে হাদিসুরের লাশ দেশে ফেরা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

হাদিসুর রহমানের মরদেহ দাফন ও দেশে ফেরা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি জাহাজটির মালিক বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক (বাণিজ্য) পীযূষ দত্ত নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, হাদিসুরের লাশটি জাহাজেই বিশেষ ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা আছে।

বৃহস্পতিবার সকালে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ মুহূর্তে হাদিসুরের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা প্রায় অনিশ্চিত। জাহাজও চলাচলের উপযোগী নয়। ফলে তার লাশটি ফ্রিজারে প্রিজার্ভ করে রাখা হয়েছে। ওই দেশে কিংবা অন্য কোথাও দাফনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

‘আমরা জাহাজে থাকা নাবিক-ক্রুসহ হাদিসুরের মরদেহ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া পোল্যান্ড দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছি।’

হাদিসুর রহমানের ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম তারেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার সকালে ভাইয়ার সঙ্গে আমাদের সব শেষ কথা হয়েছে। ভাইয়া সবার কাছে দোয়া চেয়েছিল যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে। পাঁচ দিন আগে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে পড়ার কথা জানিয়েছিল। তখন থেকে আমরা ভয়ে ছিলাম, শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্যি হলো।

‘এখন তো আরও দুশ্চিন্তায় আছি। মরদেহ কীভাবে দেশে আনব? জেলা প্রশাসকের কাছে যাব মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চাইতে।’

যা বলছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে আটকা পড়া ক্রুদের নিরাপত্তার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে নিহত হাদিসুর রহমানের মরদেহ ও ক্রুদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি।’

সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘জাহাজে এক মাসের খাবার মজুত ছিল। আমরা যোগাযোগ রাখছিলাম। গতকালই শুনেছি থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মারা গেছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে এখন চলাচল সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছি। পোল্যান্ড দূতাবাসে যোগাযোগ হয়েছে। ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কথা হয়েছে। জাহাজ থেকে নেমে গেলে আরও ঝুঁকিতে পড়বে।’

‘বাণিজ্যিক জাহাজে আক্রমণ হওয়ার কথা নয় তবুও হামলা হয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন রেড ক্রসের সঙ্গেও আমাদের কথা হচ্ছে। টার্গেট করে হামলা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। যে নাবিকরা আছেন তাদের নিরাপত্তা আমাদের ফার্স্ট প্রায়োরিটি।’

বাংলাদেশের জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি গত ২১ ফেব্রুয়ারি তুর্কি বন্দর এরেগলি ছেড়ে যায় এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বন্দর অলিভিয়ায় পৌঁছায়। ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে রাশিয়ার হামলা শুরু হলে বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।সেই সঙ্গে জাহাজে আটকা পড়েন ক্যাপ্টেন জি এম নুর ই আলম, চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুকসহ ২৯ বাংলাদেশি নাবিক। ইউক্রেনে হামলা শুরুর সপ্তম দিনে বাংলাদেশি জাহাজটিতে গোলার আঘাতের ঘটনা ঘটল। সমুদ্রগামী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ২০১৮ সালে বিএসসির বহরে যুক্ত হয়।

এ বিভাগের আরো খবর