চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। ঘোষণা অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে ১৯ জুন।
একই সঙ্গে কোন কোন বিষয়ে কত নম্বরের পরীক্ষা, পরীক্ষায় রচনামূলক ও নৈর্ব্যক্তিক অংশে কত নম্বর থাকবে এবং কীভাবে নম্বর ভাগ হবে, তাও জানিয়েছে শিক্ষা বোর্ড।
মঙ্গলবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকারের সই করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হবে
এসএসসিতে যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হবে সেগুলো হলো—বাংলা, ইংরেজি, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উচ্চতর গণিত, জীববিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় উদ্যোগ, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ভূগোল ও পরিবেশ, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, অর্থনীতি, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান এবং কৃষি শিক্ষা।
যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হবে না
এসএসসিতে যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হবে না সেগুলো হলো- ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ও বিজ্ঞান। বাদ দেয়া বিষয়গুলোতে গতবারের মতো এবারও সাবজেক্ট ম্যাপিং করে নম্বর দেয়া হবে।
স্বাভাবিক সময়ে এসএসসিতে বিভিন্ন বিষয়ে ১২টি পত্রে ও এইচএসসিতে বিভিন্ন বিষয়ে ১৩টি পত্রে পরীক্ষা হয়।
মানবণ্টন যেভাবে
এসএসসিতে ইংরেজি প্রথম পত্রে ৫০ নম্বর, ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে ৫০ নম্বর আর ব্যাবহারিক আছে এমন বিষয়ে ৪৫ নম্বরে পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে রচনামূলক ৩০ নম্বর আর এমসিকিউতে ১৫ নম্বর থাকবে। এ ছাড়া যেসব বিষয়ে ব্যাবহারিক শিক্ষা নেই, সেসব বিষয়ে ৫৫ নম্বরের (রচনামূলক ৪০, এমসিকিউ ১৫) পরীক্ষা হবে।
শিক্ষা বোর্ড বলছে, আবশ্যিক ও ব্যাবহারিক পরীক্ষাবিহীন বিষয়গুলো (ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র ব্যতীত) রচনামূলক অংশে ৪টি প্রশ্নের উত্তরে ৪০ এর মধ্যে প্রাপ্ত নম্বরকে ৭০ নম্বরে এবং এমসিকিউ অংশে ১৫টি প্রশ্নের উত্তরে ১৫ এর মধ্যে প্রাপ্ত নম্বরকে ৩০ নম্বরে রূপান্তর করা হবে।
আর ব্যাবহারিক পরীক্ষাযুক্ত বিষয়সমূহে রচনামূলক অংশে ৩টি প্রশ্নের উত্তরে ৩০ এর মধ্যে প্রাপ্ত নম্বরকে ৫০ নম্বরে এবং এমসিকিউ অংশে ১৫টি প্রশ্নের উত্তরে ১৫ এর মধ্যে প্রাপ্ত নম্বরকে ২৫ নম্বরে রূপান্তর করা হবে এবং অবশিষ্ট ১৫ নম্বর ব্যাবহারিকের জন্য বরাদ্দ থাকবে।
এ ছাড়া ইংরেজি প্রথম ও ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের প্রতিটি পত্রের ৫০ এর মধ্যে প্রাপ্ত নম্বরকে ১০০ নম্বরে রূপান্তর করা হবে। এ পরীক্ষার সময় হবে ২ ঘণ্টা।
নম্বর বিভাজন
এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উচ্চতর গণিত ও জীববিজ্ঞান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, কৃষি শিক্ষা বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় আটটি প্রশ্ন থেকে তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এই তিন প্রশ্নের মোট মান হবে ৩০। এ ছাড়া এমসিকিউ ২৫টি প্রশ্ন থেকে উত্তর দেয়ার জন্য ১৫টি প্রশ্ন বাছাই করার সুযোগ পাবেন পরীক্ষার্থীরা। এই ১৫টি প্রশ্নের মোট মান হবে ১৫।
এসএসসির মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় উদ্যোগ, ফিন্যান্স ও ব্যাকিং, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব ও বিশ্বসভ্যতা, ভূগোল ও পরিবেশ, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, অর্থনীতি বিষয়ে ১১টি প্রশ্ন থেকে ৪টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এই চার প্রশ্নের মোট মান হবে ৪০। এ ছাড়া এমসিকিউ ৩০টি প্রশ্ন থেকে উত্তর দেয়ার জন্য ১৫টি প্রশ্ন বাছাই করার সুযোগ পাবেন পরীক্ষার্থীরা। এই ১৫টি প্রশ্নের মোট মান হবে ১৫।
এ ছাড়া চারু ও কারুকলা ও সংগীত বিষয়ে ৬টি প্রশ্ন থেকে ৩টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এই তিন প্রশ্নের মোট মান হবে ৩০। এ ছাড়া চারুকলা বিষয়ে এমসিকিউ ১৫টি প্রশ্ন থেকে উত্তর দেয়ার জন্য ১০টি প্রশ্ন বাছাই করার সুযোগ পাবে পরীক্ষার্থীরা।
অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া, সহজ বাংলা প্রথম পত্র, সহজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র, আরবি, সংস্কৃত ও পালি বিষয়ে ৫টি প্রশ্ন থেকে ৩টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এই তিন প্রশ্নের মোট মান হবে ৩০। এ ছাড়া শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিষয়ে এমসিকিউ ১৫টি প্রশ্ন থেকে উত্তর দেয়ার জন্য ১০টি প্রশ্ন বাছাই করার সুযোগ পাবেন পরীক্ষার্থীরা। অন্য বিষয়গুলোতে এমসিকিউ ৫০টি প্রশ্ন থেকে উত্তর দেয়ার জন্য ২৫টি প্রশ্ন বাছাই করার সুযোগ পাবেন পরীক্ষার্থীরা।
২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে দুই দফায়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের বন্ধ দুয়ার। সশরীরে ক্লাস চালু হয় মাধ্যমিক স্কুলে। এরপর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে, সবার পর প্রাথমিকে।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয় গত ২১ জানুয়ারি। এই দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস। ২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে। তবে প্রাথমিকে ক্লাস শুরু হবে আগামীকাল থেকে। যদিও প্রতিদিন সব শ্রেণিতে ক্লাস হচ্ছে না।