বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দাফনের টাকা চাওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর সঙ্গে ইউএনওর ‘দুর্ব্যবহার’

  •    
  • ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৬:৩১

মুক্তিযোদ্ধার ছেলে আলমগীর আহমদ বলেন, ‘‘আমরা ইউএনওকে বিষয়টি জানানোর পরপরই তিনি ক্ষেপে গিয়ে বলেন, ‘তোমাদের কোনো কমনসেন্স নেই। কখন অফিসে ঢুকতে হয় তা জান না। অফিসে কত গোপনীয় কাজ থাকতে পারে তা না জেনেই অফিসে ঢুকে চেয়ারেও বসে গেলে। এরপর উচ্চ স্বরে ধমক দিয়ে তিনি আমাদের অফিস থেকে বের করে দেন।’’’

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার এক মুক্তিযোদ্ধার দাফন-কাফনের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এসব অভিযোগ এনে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ময়মনা খাতুন নামের এক নারী। তিনি কোম্পানীগঞ্জের পাড়ুয়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আবদুল মতলিবের স্ত্রী।জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেয়ার পর সোমবার ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী-সন্তানকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে নেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং। এ সময় দাফনের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি তদন্ত করে খুঁজে বের করার আশ্বাস দেন ইউএনও।ওই মুক্তিযোদ্ধার ছেলে আলমগীর আহমদ সোমবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে ইউএনও আমাদেরকে তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ছিলেন। এ সময় উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। বাবার দাফনের টাকা কোথায় গেল তা তদন্ত করে বের করার আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও। তা ছাড়া দুর্ব্যবহারের বিষয়টি ভুল-বোঝাবুঝি বলে তিনি দাবি করেছেন।’যদিও ইউএনও লুসিকান্ত হাজং দুর্ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ওই মুক্তিযোদ্ধার পরিবার দাফনের টাকা পায়নি তা আগে জানতাম না। জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেয়ার পরই জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’রোববার জেলা প্রশাসকের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে ময়মনা খাতুন উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারিতে মারা যান তার স্বামী। তার মৃত্যুর পর সরকার থেকে দাফন-কাফন বাবদ যে টাকা দেয়া হয় তা তিনি ও তার পরিবারের কেউ নেননি।তবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে কে বা কারা টিপসই দিয়ে ওই টাকা তুলে নিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে ২৪ ফেব্রুয়ারি ময়মনা ও তার ছেলেকে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে ইউএনও দুর্ব্যবহার করেন।ইউএনওর দুর্ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে আলমগীর আহমদ বলেন, ‘‘আমার বাবার দাফন-কাফনের টাকা কোথায় গেল তা জানতে মাকে নিয়ে ইউএনও অফিসে যাই। আমরা ইউএনওকে বিষয়টি জানানোর পরপরই তিনি ক্ষেপে গিয়ে বলেন, ‘তোমাদের কোনো কমনসেন্স নেই। কখন অফিসে ঢুকতে হয় তা জান না। অফিসে কত গোপনীয় কাজ থাকতে পারে তা না জেনেই অফিসে ঢুকে চেয়ারেও বসে গেলে।' এরপর উচ্চ স্বরে ধমক দিয়ে তিনি আমাদের অফিস থেকে বের করে দেন।’’তবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার প্রশ্নই ওঠে না। ওই নারীর সঙ্গে সেদিন আমার কোনো কথাই হয়নি। তবে তার ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। অন্য কেউ টাকা উত্তোলন করে নেয়ার বিষয়টি আমরা জেনেছি। এই টাকা কোথায় গেল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’তিনি বলেন, ‘গত জানুয়ারিতে আমরা অনুষ্ঠান করে মারা যাওয়া সব মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের হাতে দাফন-কাফনের টাকা তুলে দিই। প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্ত্রী বা সন্তানদের হাতে টাকা তুলে দেয়া হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডারও উপস্থিত ছিলেন। কীভাবে একজনের টাকা অন্যজন নিয়ে গেল তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শফিউদ্দিন রেনু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ইউএনও তেমন দুর্ব্যবহার করেননি। ওই ছেলেটা (মুক্তিযোদ্ধার ছেলে) ভুল বুঝেছে। তবে আজকে এই ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। তাদের টাকার বিষয়টিও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর