বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এজেন্ট ব্যাংকে নিয়োগ জালিয়াতি, কোটি টাকা লোপাট

  •    
  • ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:১১

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগকারীরা জানান, নানা অজুহাতে বেতন বন্ধ রেখে ২০২০ সালের মার্চে এজেন্ট শাখার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন থেকে তারা এজেন্ট জহির উদ্দিন ও আজিজুর রহমান এবং তাদের এজেন্ট শাখার পরিচালক তরিকুল ইসলামের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তরিকুলের চৌগাছার হাকিমপুরের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

যশোরের চৌগাছায় সিটি ব্যাংকের তিন এজেন্ট শাখায় ১৭ জনকে নিয়োগের কথা বলে জামানত বাবদ ১ কোটি ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে উধাও হয়েছেন দুই এজেন্ট ও তাদের এক প্রতিনিধি।

অভিযুক্তরা হলেন যশোরের শার্শা উপজেলার যাদবপুর গ্রামের জহির উদ্দিন বাবর, সদরের ইছালি গ্রামের আজিজুর রহমান ডেভিড এবং তাদের প্রতিনিধি চৌগাছার হাকিমপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম।

ব্যাংকটির এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের যশোর ও নড়াইল জেলা ব্যবস্থাপক আবু জাফরের যোগসাজশে প্রতারক চক্রটি বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় বুধবার সেই ১৭ চাকরিপ্রার্থী চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারা চৌগাছা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রতারণার ঘটনা তুলে ধরেন।

এ বিষয়ে সিটি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের নড়াইল ও যশোর জেলার ব্যবস্থাপক আবু জাফর বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি আমি বা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবহিত নই। এটি সম্পূর্ণ এজেন্টের দায়িত্ব।’

অভিযুক্ত দুই এজেন্ট ও তার প্রতিনিধির মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ জানান, এ বিষয়ে ১৭ জনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে মামলা নথিভুক্ত করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগকারী জাফর ইকবাল বলেন, ২০১৯ সালের মার্চে জহির, আজিজুর ও তরিকুল সিটি ব্যাংকের চৌগাছা, পুড়াপাড়া ও ছুটিপুর এজেন্ট শাখায় চাকরি দেয়ার জন্য মোট ২৪ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের মাসিক ১৪ হাজার টাকা বেতন দেয়া হবে বলা হয়।

তাদের কথা বিশ্বাস করে আজিজুর, জহির ও তরিকুলকে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ব্যবস্থাপক আবু জাফরের উপস্থিতিতে ৫ লাখ টাকা করে, কয়েকজনের তারও বেশি টাকা জামানত দিয়ে ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় যোগ দেন ১৭ জন।

তাদের সিটি ব্যাংকের ১০টি এজেন্ট শাখার এজেন্ট আজিজুর রহমান ডেভিড ও জহির উদ্দিন বাবরের মালিকানার তাজিমুল টেকনোলজি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্যাডে ইংরেজিতে নিয়োগপত্র দেয়া হয়। সেখানে ট্রেইনি বিজনেস এক্সিকিউটিভ পদে নিয়োগ দিয়ে ১৪ হাজার টাকা মাসিক বেতন নির্ধারণ করা হয়। কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে পদোন্নতি ও বেতন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।

কয়েকজনকে জামানতের টাকার বিপরীতে জহির উদ্দিন বাবরের সিটি ব্যাংকের একটি হিসাবের চেকও দেয়া হয়।

অভিযোগকারীরা জানান, নিয়োগের পর আমেনা খাতুনসহ দুজনকে ঢাকায় ট্রেনিং সিটি ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ দিয়ে এজেন্ট শাখায় কাজ দেয়া হয়। চৌগাছা শহরের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় এজেন্ট শাখার কার্যালয় খোলা হয়। এজেন্ট শাখায় কার্যক্রম শুরুর পর প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে তিন মাসের বেতন দেয়া হয় তাদের।

তাদের অভিযোগ, নানা অজুহাতে বেতন বন্ধ রেখে ২০২০ সালের মার্চে এজেন্ট শাখার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন থেকে তারা এজেন্ট জহির উদ্দিন ও আজিজুর রহমান এবং তাদের এজেন্ট শাখার পরিচালক তরিকুল ইসলামের মোবাইল ফোন বন্ধ পান। এমনকি তরিকুলের চৌগাছার হাকিমপুরের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

তারা জানান, জামানতের টাকার বিপরীতে যে চেক দেয়া হয়েছে, সেই হিসাবে টাকা তুলতে গেলে বলা হয়, সেখানে কোনো টাকা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে জাফর ইকবাল আরও বলেন, ‘জামানতের টাকা দেয়ার বিষয়ে সব জানতেন ব্যবস্থাপক আবু জাফর। তার সামনেই সবাই জামানতের টাকা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা গৌতমসহ আরও কয়েকজন এ বিষয়ে অবগত ছিলেন। অথচ আমাদের জামানতের বিষয়টির সুরাহা না করেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কিছুদিন পর চৌগাছার অন্য একজনকে নতুন এজেন্ট নিয়োগ করে। তিনি শহরের ধনী প্লাজায় এজেন্ট শাখার কার্যক্রম চালান।’

১৭ জনের সবাই জানান, জামানতের টাকা দিতে জমি, গরু, ছাগল বিক্রি, এমনকি সুদের ওপর টাকা ঋণ করেছি। তিন বছর ধরে একদিকে বেকারত্ব, অন্যদিকে ধারদেনা পরিশোধের চাপে তারা মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আমেনা খাতুন, হাফিজুর রহমান, শামীমা নাছরিন, খাদিজা খাতুন, মাজহারুল ইসলাম, আয়েশা খাতুন, তাজিমুল ইসলামসহ অভিযোগকারী ১৭ জনই উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর