রাতে দলবেঁধে কলাগাছ কেটে আনে তারা। এরপর মাটিতে গর্ত করে কলাগাছ দাঁড় করিয়ে দেয়া হয় শহীদ মিনারের আদলে। এর চারপাশে কাগজ, রঙিন বেলুন, ফুল ও পাতা দিয়ে সাজানো হয়। গ্রামের পথে-প্রান্তরে ঘুরে সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন ধরনের ফুল। সেই ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের জন্য বানানো মিনারে জানানো হয় শ্রদ্ধা।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এমন আয়োজন করে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার কালখড়পাড় ও বানাশুয়া গ্রামের একদল শিশু।
করোনায় স্কুল বন্ধের মধ্যেও ভাষা শহীদদের প্রতি হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা জানাতে তাদের সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে তারা।
কালখড়পাড় গ্রামের ইকবাল হোসেন। স্থানীয় ভরাসার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সে।
ইকবাল বলে, ‘করোনার জন্য ইসকুল বন্ধ। তাই আমডা বড়দের থাইক্কা টাকা নিছি। আর আমডার জমানো টাকা দিয়া বেলুন, রঙিন কাগজ কিনছি। এগুলো দিয়ে শহীদ মিনার বানাইছি।’
শিমড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির মাহিবুর রহমান জাহিন বলে, ‘আমরা রাতে কলাগাছ আনছি। সব্বাই মিল্লা শহীদ মিনার বানাইছি।’
রিফাত হোসেন ও মো. বরকতও পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। তারা জানায়, যখন তাদের শহীদ মিনার বানানো শেষ, তখন গভীর রাত। গ্রামের মুরব্বিরাও মিনার বানানোর কাজে তাদের সহযোগিতা করেন। পরে বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে চড়ুইভাতির আয়োজন করা হয়।
শিমড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক মুনিরা বেগম বলেন, ‘স্কুলে শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করছি।
‘তবে শুনেছি পাশের বানাশুয়া ও কালখড়পাড় এলাকার শিশুরা নিজেদের উদ্যাগে শহীদ মিনার বানিয়েছে। ভালো লেগেছে শুনে। ভাষা শহীদদের ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে যাক।’