ভোলার মনপুরায় মেঘনা নদীতে অপহৃত সাত জেলেকে ২৩ ঘণ্টা পর একটি ট্রলারসহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোবাবর ভোরে তাদের মেঘনা নদীর চর থেকে উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত শনিবার ভোর ৬টায় মনপুরার চরপিয়ালের পাশে মেঘনা নদীতে মাছ শিকারের সময় তাদের অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা।
উদ্ধার জেলেরা হলেন মনপুরার রহমনপুর গ্রামের মোজাহার বেপারির ছেলে জাহাঙ্গীর, সোলেমানের ছেলে বাবুল, খলিল মাঝির ছেলে ইসমাইল, বাসু মাঝির ছেলে বাসেত, মাইন উদ্দিনের ছেলে রিয়াজ, লতিফ সুকানির ছেলে সোহেল এবং মফিজের ছেলে সোহেল।তবে জেলেদের উদ্ধারের ঘটনায় তাদের আড়তদার ও কোস্টগার্ড ভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছে।রোববার সকালে হাতিয়া কোস্টগার্ড সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে জানান, ভোর ৫টার দিকে হাতিয়ার চরআতাউরে অভিযান চালিয়ে একটি ট্রলারসহ ওই সাত জেলেকে উদ্ধার করেন তারা। তবে এ ঘটনায় কোনো জলদস্যু আটক করা সম্ভব হয়নি।কোস্টগার্ডের হাতিয়ার স্টেশন কমান্ডার ইফতেখারুল আলম জানান, মনপুরায় মেঘনা নদীর চরসাকুচিসংলগ্ন এলাকায় ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকা থেকে সাত জেলেকে একটি ডাকাত দল অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে।
পরবর্তী সময়ে মুক্তিপণ দাবি করা মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে কোস্টগার্ড জানতে পারে তারা উপজেলার দাসেরহাট এলাকায় অবস্থান করছে। পরে ইফতেখারুল আলমের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের একটি দল অভিযান চালিয়ে মেঘনা নদীর চরআতাউরের পাশের এলাকা থেকে তাদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এ সময় অপহরণকারীরা কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।তিনি বলেন, ‘জলদস্যুরা কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহৃত জেলেদের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ট্রলারে ফেলে চলে যায়। জেলেরা সুস্থ আছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’এদিকে উদ্ধার জেলেদের আড়তদার ও ইউপি চেয়ারম্যান অলিউল্লা কাজল দাবি করেন, মুক্তিপণের বিনিময়ে জেলেদের উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মুক্তিপণের ২ লাখ ২ হাজার টাকা দস্যুদের পাঁচটি বিকাশ নম্বরে দেয়ার পর তারা জেলেদের মুক্তি দিয়েছে।এ ঘটনায় উদ্ধার জেলে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘শনিবার চরপিয়াল এলাকায় নদীতে মাছ ধরার সময় হাতিয়ার জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনীর ১০-১২ জন সদস্য ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে আমার ট্রলারে আইসা জাল, মাছ ও মোবাইল নিয়ে যায়।
‘এ সময় আমার পাশে অন্য ট্রলারেও একইভাবে হামলা চালায় তারা। তবে বেশি মাছ ও টাকা না পাওয়ায় সাত ট্রলারের প্রধান সাতজন মাঝির চোখ বেঁধে আমার ট্রলারসহ জঙ্গলের ভেতর নিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘এর পর থেকে আমাদের বাড়ি ও আড়তদারের নম্বর নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে অনেকবার কল দেয়। পরে কীভাবে কী হইছে আমি আর বলতে পারি না।’