কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে উদ্ধার দগ্ধ মরদেহটি সজনীর নয় বলে জানিয়েছে তার বাবা। তবে এর আগে তিনি দাবি করেছিলেন, সেটি তার মেয়ের। এর পর পরই পুলিশ সজনীর স্বামীকে গ্রেপ্তার দেখায়।
মেয়েটির বাবা রোববার দুপুরে পুলিশকে জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে সজনী তার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছে। সে ভেড়ামারার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) নান্নু খান নিউজবাংলাকে জানান, সজনীকে থানায় হাজির করতে বলা হয়েছে। তিনি চলে এলে তার স্বামী লালনকে ছেড়ে দেয়া হবে।
দগ্ধ মরদেটি তাহলে কার এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা তার পরিচয় খুঁজছি। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে এরই মধ্যে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করার জন্য সেটি ভেড়ামারা পৌরসভায় হস্তান্তর করা হবে।’
শনিবার বিকেল ৫টার দিকে বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ দাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের কলাবাগান থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিন সকালেই সজনী নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্বামী ভেড়ামারার ১৬ দাগ এলাকার মো. লালন।
সজনীর বাবা সিরাজুল ইসলাম মিরপুরের রানাখড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জানান, ১৩ বছর আগে লালনের সঙ্গে সজনীর বিয়ে হয়। তাদের ঘরে এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে।
জিডির বরাতে ভেড়ামারা থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ‘সজনী মায়ের বাড়ি যাওয়ার নাম করে বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বের হন। পরে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি তাকে। ফোনে যোগাযোগ করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।’
ওসি জানান, শনিবার বিকেল ৫টার দিকে সজনীর মা-বাবাসহ পরিবারের লোকজন থানায় আসেন জিডি করতে। তারা জানতেন না তার স্বামী আগেই জিডি করে গেছেন।
এ সময় পুলিশের কাছে খবর আসে বাহিরচর এলাকায় কলাবাগানে একটি নারীর দগ্ধ মৃতদেহ পাওয়া গেছে। সে সময় পুলিশ সজনীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়েই ঘটনাস্থলে যায়।
খবর দেয়া হয় তার স্বামী লালনকে। সজনীর মা-বাবা দগ্ধ মরদেহটি তাদের মেয়ের বলে শনাক্ত করলেও লালন দাবি করেন এটি তার স্ত্রীর মরদেহ নয়।
পরে সজনীর বাবার করা হত্যা মামলায় লালনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
সজনীর বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সজনী তাকে ফোন করে জানিয়েছে পারিবারিক কলহের কারণেই সে ঢাকায় এসেছে।’
তার অভিযোগ, কিছুদিন ধরে লালন তার মেয়েকে নানাভাবে নির্যাতন করছিল। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কয়েক দিন আগে সজনী বাবার বাড়ি আসে।
১৬ ফেব্রুয়ারি লালন নিজে গিয়ে এক প্রকার জোর করেই স্ত্রীকে ১৬ দাগের বাড়িতে নিয়ে যান। ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে মোবাইল ফোনে সজনীর মাকে লালন জানান, তার মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না।