বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে তৈরি সিনেমা ‘চিরঞ্জিব মুজিব’-এর ফেস্টুন খুলে ফেলা এবং আমন্ত্রণপত্র ছুড়ে ফেলার বিষয়ে সাফাই গাইলেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
তিনি দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মিথ্যা ও বানোয়াট। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনেরও দাবি জানান তিনি।
মেয়র বলেন, ‘সেদিন আমার রুমে অপরিচিত তিনজন ব্যক্তি আসেন। আমি তাদের বসতে বলি। তারা আমাকে একটি কার্ড দিলে সেটি টেবিলের ওপরই রাখি। পরে ফেস্টুন লাগানোর বিষয়ে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ রোড ডিভাইডার থেকে ফেস্টুন অপসারণ করতে অনুরোধ করি। পরে তারা নিজ থেকেই বলে- সেগুলো তারা রাস্তার দিকে লাগাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময় আমার কক্ষে শতাধিক সেবাগ্রহীতা এবং বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। তারা বিষয়টি দেখেছেন। এমনকি রুমে সিসি ক্যামেরা আছে, সেটা দেখলেও হবে। ঠুনকো বিষয় নিয়ে তুষার কান্তি সভা-সমাবেশ করেন। এর আগেও করেছেন। নগরবাসী সেটা জানে।’
এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে তার বিরুদ্ধে অপরাজনীতি হচ্ছে দাবি করে মেয়র মোস্তফা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বরাদ্দে যখন সিটির কাজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে, তখন জনগণ থেকে কিছু বিচ্ছিন্ন নেতা এই ঘটনাকে পুঁজি করে নোংরা রাজনীতি করছেন। আমি এই ঘটনাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে মনে করি।’
মেয়র মোস্তফার বিরুদ্ধে ফেস্টুন খুলে ফেলা ও তাকে দেয়া আমন্ত্রণ কার্ড ছুড়ে ফেলার অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার দুপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা মেয়রকে জাতির সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলে।
রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মহানগর ছাত্রলীগ আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘চিরঞ্জিব মুজিব চলচ্চিত্রটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানার উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে। আগামী ১৯ ফেরুয়ারি রংপুরে প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
‘এ জন্য চলচ্চিত্রটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা বুধবার সিটি মেয়র মোস্তফার সঙ্গে দেখা করে আমন্ত্রণপত্র দিলে মেয়র সেটি ছুড়ে মারেন। আর যে ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে, তা সরিয়ে ফেলার কথা বলেন।
‘তার এ আচরণ এবং দম্ভ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতি চরম অশ্রদ্ধা ও অবমাননার শামিল। তাই তাকে জাতির সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
এ সময় মেয়রকে রোববারের মধ্যে ক্ষমা আলটিমেটাম দেয়া হয়। আর তা না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।