প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিফোনে লড়াকু তামান্না আক্তার নূরার সঙ্গে কথা বলার পর তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।
যশোর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক অসিত কুমার সাহা মন্ত্রী স্বাক্ষরিত অভিনন্দনপত্রটি বুধবার রাতে তামান্নার হাতে তুলে দেন।
একই সঙ্গে তামান্নার উচ্চশিক্ষা ও পরবর্তী সময়ে স্বপ্নপূরণে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সব সময় পাশে থাকবে বলেও অভিনন্দনপত্রে উল্লেখ করেছেন মন্ত্রী।
অভিনন্দনপত্র হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত তামান্না নূরা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে নিজেকে অসহায় মনে হলেও এখন মনে হচ্ছে না। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই আমার পাশে আছেন। শুভেচ্ছাপত্র পাঠানোর জন্য মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
অসিত কুমার সাহা বলেন, ‘তামান্না অনুপ্রেরণার অনন্য উদাহরণ। তামান্নার স্বপ্নপূরণে পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ নানাজন। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে তাকে প্রতিবন্ধী ভাতা, হুইলচেয়ারসহ বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে।’
এদিকে বুধবার রাতে তামান্নাকে দেখতে যান যশোরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বোর্ডের সচিব অধ্যাপক মো. আবদুল খালেক সরকার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র ও কলেজ পরিদর্শক কে এম গোলাম রব্বানি। তারা তামান্নাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি টানা চতুর্থবার জিপিএ-৫ পাওয়ায় তাকে মিষ্টিমুখ করান।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুরের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে বড় তামান্না নূরা। তামান্না যশোরের বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এবার এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
এর আগে সমাপনী, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন তিনি।
এদিকে তামান্নার অদম্য ছুটে চলার পথে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্তা ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীও খোঁজখবর নেয়া ও প্রতিশ্রুতিতে খুশি তামান্নার বাবা রওশন আলীও।
তিনি বলেন, ‘মেয়ে এত কষ্ট করেছে যে তার স্বপ্নপূরণে সবাই এগিয়ে আসছে, যা কল্পনাও করিনি। খুশিতে আমার বুকটা ভরে যাচ্ছে। ও যেন নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে, সে জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’
জন্ম থেকেই দুই হাত ও এক পা নেই তামান্নার। তবে শারীরিক এই প্রতিবন্ধকতা তাকে পড়ালেখায় দমিয়ে রাখতে পারেনি।