রাজবাড়ী শহরের যেখানে-সেখানে ময়লার স্তূপ। খোলা জায়গায় ফেলে রাখা ময়লা ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। ময়লায় বসা মশা-মাছির কারণে নানা রোগে ভুগতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা বলছেন, পৌরসভার কর্মীরা নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলেন না। তবে কর্তৃপক্ষ দোষ দিচ্ছে স্থানীয়দেরই।
শহর ঘুরে দেখা যায়, মুরগির ফার্ম নতুন বাজারে, বিনোদপুর খাদ্যগুদামের পাশে, কলেজ রোডে, স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে, শ্রীপুর বাস টার্মিনালের পেছনে, বিনোদপুর-লক্ষ্মীকোল রোডসহ বিভিন্ন জায়গায় ময়লার ভাগাড়।
প্রতিটি ভাগাড়ের পাশের রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করেন। একটি ভাগাড়ের পাশে আছে কিন্ডারগার্টেন স্কুল।
মাঝে মাঝে যখন ময়লা পোড়ানো হয়, তখন পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। অনেকেরই তখন শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়।
মুরগির ফার্ম নতুন বাজার এলাকার চা-দোকানি মনির হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই গর্তে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়ায়। অনেক সময় কাস্টমাররা গন্ধের কারণে চলে যায়।’
এই এলাকার ব্যবসায়ী সাব্বির হোসেন জানান, ময়লার গন্ধে অনেক সময় মানুষ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে।
ময়লার স্তূপের পাশ দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় সোহাগ মিয়ার।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে কাজে যাই। যাওয়ার সময় গন্ধে প্রায় বমি চলে আসে। হাত দিয়ে নাক-মুখ চেপে রাখি। ময়লাগুলো প্রায় রাস্তার ওপরই ফেলা।’
জেলা সিভিল সার্জন ইব্রাহীম হোসেন টিটন জানান, রাস্তার ধারে এভাবে ফেলা রাখা ময়লায় মশা-মাছি জন্মায়। এ থেকে স্থানীয়রা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
রাজবাড়ী পৌরসভায় ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা শ্রীপুর বাস টার্মিনালের কাছে।
পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মোফাজ্জেল হোসেন বকুল জানান, পুরো পৌরসভায় ১০২ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আছেন। তারা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভ্যানে করে ময়লা এনে নির্ধারিত জায়গায় ফেলেন। প্রতিটি ওয়ার্ডেই ময়লার ভ্যান দেয়া আছে।
বকুলের অভিযোগ, ‘ময়লা ফেলার সার্ভিসের জন্য পৌরসভাকে ১০০ টাকা করে বিল দিতে হয়। এই টাকা দেয়ার ভয়ে লোকজন যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে।’
একই অভিযোগ পৌর মেয়র আলমগীর শেখ তিতুর। তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলার জন্য ভ্যান সার্ভিস থাকলেও মানুষ আসলে সচেতন নয়। তারা নিজেরাই যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে আবার ময়লা নিয়ে অভিযোগ করে। মানুষকে সচেতন করতে বিশেষ কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।’