বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অন্যায় তদবির না মানলে ‘দালাল’ বানিয়ে দেয়

  • নিজস্ব প্রতিবেদক    
  • ২৬ জুন, ২০২৫ ১৮:৪১

কারও অন্যায় তদবির মেনে না নিলেই সরকারের উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয় বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি কথা বলেন। ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির আইনি কাঠামোর পর্যালোচনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিশ্বাস করবেন, আমার কাছে বহুত (অনেক) অন্যায় তদবির আসে। যে মুহূর্তে তদবিরগুলো মানি না; দেখা যায় যার তদবির, অন্যায় তদবির রাখিনি, কিছুদিন পর সে আমাকে ভারতের দালাল বলা শুরু করে দেয়। ৪০-৫০ বছর আগে আমার সঙ্গে কার কোন সম্পর্ক ছিল, তা নিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রাম বানানো শুরু করে দেয়। যা ইচ্ছা বলে। ওই যে ঝিনুক, নীরবে সও, সহ্য করে যাই। কিচ্ছু করি না। মামলা তো দূরের কথা, কোনো উত্তরও দেই না।’

তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি হচ্ছে, জীবনে কখনো এত শক্তিহীন, দুর্বল এবং অবরুদ্ধ অনুভব করিনি। সরকারে যোগ দিয়ে যা ফিল করছি। এই সমালোচনার ক্ষেত্রে বলছি। সোশ্যাল মিডিয়ায়, মেইন স্ট্রিম মিডিয়ায় নয়।’

উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা বেশি পরিচিত, তারা গণমাধ্যমের বেশি নোংরামির শিকার হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। অন্তর্বর্তী সরকারের অনেক দুর্বলতা থাকলেও প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা সেবকের মতো কাজ করার চেষ্টা করছেন বলেও জানান এই উপদেষ্টা।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘একটা মিনিমাম আন্ডারস্ট্যান্ড থাকতে হবে, পুলিশ রিলেটেড (সম্পর্কিত) কোনো কিছুর ব্যাপারে আমার কোনো কিছু করার নেই। সাংবিধানিকভাবে কোনো কিছু করার নেই। যতই আমার গুড উইশ থাকুক, যতই রক্তক্ষরণ থাকুক, কেউ ফলস (মিথ্যা) মামলা করলে আমার কিছু করার নেই। তাহলে আমি কীভাবে কিছু করব?’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো হয় উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘ইউনূস স্যার, শফিক, আমিসহ আমাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অকল্পনীয়, গাঁজাখুরি, অবিশ্বাস্য, নির্মম, মিথ্যাচার দিনের পর দিন চলছে। আমরা একটা মামলাও করিনি। এটি বাংলাদেশের মানুষের বিবেকের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, একশ্রেণির মানুষ মামলা করার মধ্যে যদি ব্যবসার প্রবণতা খুঁজে পান, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ যদি এর সঙ্গে শামিল হন, পুলিশ যদি দায়িত্বশীল না হয়, তাহলে এটি বন্ধ করা যাবে না।

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, সাবসটেনটিভ ও সাবসটেনশিয়াল এভিডেন্স পাওয়া না গেলে কাউকে যাতে গ্রেপ্তার করা না হয়। তারপরও হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে হয়ে থাকতে পারে। আমাদের অনেক ব্যর্থতা আছে। আমরা প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টা করছি।’

একাত্তর টিভির দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি জানি, গ্রেপ্তার নিয়ে অনেকের আপত্তি হচ্ছে। আমি যেটুকু জানি, তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, সেটি সাংবাদিকতা করার জন্য হয়নি। তারা জামিন পেতে পারে কি না, সেই প্রশ্নও তোলা যায়। কিন্তু মামলার ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। কারণ, মামলা করেছে সাধারণ মানুষ।’

সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। সভায় আরও বক্তব্য দেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বদিউল আলম মজুমদার, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক ও শিক্ষক পারভেজ করিম আব্বাসী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এম এ আজিজ, বিএসএম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাখাওয়াৎ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান, বিদেশে গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক পারভীন এফ চৌধুরী, ফ্যাক্টচেকার কদরুদ্দিন শিশির প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর