রাজধানীতে প্রায় ২০ বছর আগে ইয়াবা জব্দের ঘটনায় গুলশান থানায় করা দেশের প্রথম মামলায় রায় দিয়েছে আদালত। এতে দুই ভাইসহ অভিযুক্ত পাঁচজনকেই বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার জজ কোর্টে পরিবেশ আপিল আদালতের (বিশেষ দায়রা আদালত) বিচারক এস এম এরশাদুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন শরীয়তপুরের নড়িয়া থানার ছোটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম ওরফে জুয়েল, তার ভাই সফিকুল ইসলাম ওরফে রফিকুল ইসলাম, একই গ্রামের সামছুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার মোগড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সোমনাথ সাহা ওরফে বাপ্পী এবং ডেমরা থানার মাতুয়াইল দক্ষিণ পাড়া মৃধাবাড়ির এমরান হক।
এদের মধ্যে সফিকুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তাকে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এ ছাড়া মাদক আইনের আরেক ধারায় তাকে আরও তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ২ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাস বিনাশ্রমে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
অন্য চার আসামিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তাদের আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
আসামিদের মধ্যে জুয়েল ও রফিকুল ইসলাম রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অন্য তিন আসামি পলাতক।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর এ এফ এম রেজাউল করিম হিরণ সাজার বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘রায়ে মামলায় মাদক বিক্রির জব্দ করা ২ লাখ ৩৯ হাজার ৮০০ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন সেট রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০০২ সালের ১৮ ডিসেম্বর গুলশানের নিকেতন আবাসিক এলাকায় প্রধান আসামি সফিকুল ইসলামের বাসায় তল্লাশি চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সেখান থেকে ইয়াবাসহ ৪০০ গ্রাম টেট্রা হাইড্রোক্যানাবিনল, তিনটি হেরোইন সেবনের পাইপ, দুটি যৌন উত্তেজক এডেগ্রা ট্যাবলেট ও ১২০টি মরফিন ও অ্যামফিটামিনযুক্ত মাদক বিক্রির ২ লাখ ৩৯ হাজার ৮০০ টাকা, ২১টি পর্নো সিডি, দুটি মোবাইল ফোন সেট জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক এনামুল হক গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০০৩ সালের ১৪ জানুয়ারি ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়া হয়। পরে হাইকোর্ট এ মামলার আসামি মোসফিক রহমান ওরফে তমালের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম কোয়াশ করে।
২০১০ সালের ৫ এপ্রিল পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১৫ সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে আদালত।