রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় তিনটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ইয়াবার কারবার করে আসছে একটি চক্রটি। বিভিন্ন ব্যক্তিকে বাহক হিসেবে ব্যবহার করে টেকনাফ থেকে ইয়াবা এনে ফ্ল্যাটগুলোতে মজুত করত চক্রটি। এরপর নারীর মাধ্যমে সেগুলো বিক্রি করত।
দুই দিনের টানা অভিযানে চক্রটির ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তাদের কাছ থেকে ৪০ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো (উত্তর) উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ভাটারা এলাকা থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে তানভির মাহমুদ ও রবিনকে ৮০০ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘তাদের দেয়া তথ্য-উপাত্ত প্রযুক্তিগতভাবে বিশ্লেষণ করে ঢাকার পূর্ব শেওড়াপাড়া এলাকায় একটি শক্তিশালী ইয়াবা কারবারির সিন্ডিকেটকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই এবং তাদের কার্যক্রম মনিটরিং করতে থাকি।
‘চক্রটির কাছে ইয়াবার একটি বড় চালান আসার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে টেকনাফের মো. ইব্রাহিমকে ১০ হাজার, ইয়াকুবকে ৬ হাজার, মো. শামসুল আলমকে ২৩ হাজার ও জবা আক্তারকে ২০০ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে মোট ৪০ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়,’ যোগ করেন তিনি।
কারবারের কৌশল
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘ইয়াবা কারবারি ইব্রাহিম, ইয়াকুব ও শামসুল আলম টেকনাফের মূল হোতা। তারা অভিনব কৌশলে টেকনাফ থেকে ইয়াবার বড় চালান ঢাকায় আনেন এবং রাজধানীতে তাদের নির্ধারিত কয়েকজন লোকের মাধ্যমে মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এরা টেকনাফ থেকে মাদক ঢাকায় আনার ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার হিসেবে বিভিন্ন জনকে ব্যবহার করতেন, নিজেরা সরাসরি বহন করতেন না। ঢাকায় এ কাজে তারা জবা আক্তারের ভাড়া বাসা ব্যবহার করতেন।’
কারবারের নিরাপত্তার স্বার্থে জবা আক্তার পূর্ব শেওড়াপাড়া এলাকায় ৩টি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। বড় চালান মজুতের জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাসা ব্যবহার করতেন।
এনক্রিপ্টেড অ্যাপসের ব্যবহার
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান আরও বলেন, ‘এই সিন্ডিকেটের সবাই গোপনীয়তার স্বার্থে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড অ্যাপস ব্যবহার করেন। তারা কোনো নির্দিষ্ট ফোন নম্বর ব্যবহার করেন না। এনক্রিপ্টেড অ্যাপসগুলো বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা নিয়ে আমরা অধিকতর অনুসন্ধানপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’