অপহরণের ১২ ঘণ্টা পর নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে কলেজছাত্রকে উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
অপহৃত ছা্ত্র ২০ বছরের কবির হোসেন শহরের পারলা এলাকার রস্তুম আলীর ছেলে। তিনি নেত্রকোনা সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
নেত্রকোনা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান এসপি আকবর আলী মুন্সী।
তিনি জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে কবির হোসেন একটি ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে চড়ে সীমান্তবর্তী পাঁচগাঁও এলাকায় তার বন্ধু স্বাধীন ইসলাম জয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। ওই এলাকায় পৌঁছার পর তিন থেকে চারজন পথরোধ করে প্রথমে তাকে একটি পাহাড়ের টিলায় নিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর তাকে একটি বাড়িতে নিয়ে জিম্মি করে রাখে। এ সময় অপহরণকারীরা তার কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা ও একটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে তার মুঠোফোন থেকেই কবিরের বাবা রস্তুম আলীকে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
অপহরণকারীদের ফোন পাওয়ার পর কবিরের পরিবার বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানায়। তিনি ডিবির একটি টিম কলমাকান্দায় পাঠান। ডিবি সদস্যরা অপহরণকারীদের দুটি ফোন নম্বর সংগ্রহ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে দুই হাজার টাকা পাঠায়। পরে মোবাইল ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে রাত ১০টার দিকে বরুয়াকোনা এলাকার কাছাকাছি ভারতীয় সীমান্তের পাশে গোনাপাড়া গ্রামে অভিযান চালায়।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা কবিরকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে কবিরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ সময় কবির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ চক্রে অন্তত ৮ থেকে ১০ জন সদস্য ছিল। তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করেছে।’
তবে ঘটনার সঙ্গে তার বন্ধু স্বাধীন ইসলাম জয় জড়িত কি না তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।
আকবর আলী মুন্সী বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে তারা পেশাদার অপরাধী চক্র। আমরা তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ হাসান বলেন, ‘এ ঘটনায় কলমাকান্দা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল ও মুর্শেদা খাতুনসহ উদ্ধার টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।