বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাবেক ছাত্রীকে নির্যাতনের বিচার চেয়ে ঢাবিতে মানববন্ধন

  •    
  • ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৮:৪২

কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘২০২১ সালের আগস্ট মাসে বিচার বিভাগ বিচারকদের জন্য একটি আবাসন প্রকল্প আনে। সেখানে জমি কেনার জন্য সে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় সে আমার গলায় হিজাবের পিন ঢুকিয়ে দেয়াসহ নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন চালাতে থাকে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্যাতনের বিচার চাই।’

যৌতুকের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সংস্কৃতি বিভাগের সাবেক ছাত্রী কানিজ ফাতেমার ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে তার বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বুধবার দুপুরে এ মানববন্ধন হয়।

ঢাবির সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন কানিজ ফাতেমা। ২০১৯ সালে তার বিয়ে হয় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সহকারী জজ নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তবে বিয়ের পর থেকেই নজরুল ইসলাম যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন বলে দাবি ফাতেমার।

সহকারী জজের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেন।

আদালতে শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মকবুলুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, বিচারক শাহবাগ থানার পরিদর্শক মাহফুজুল হক ভূঁইয়াকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই তাকে বিয়ে করতে রাজি ছিলাম না। সে আমার পরিবারকে নানাভাবে প্রেশার দিয়ে বিয়ে করেছে। বিয়ের পর থেকেই সে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এ কারণে বিয়ের দুই মাসের মাথায় আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করি।’

‘২০২১ সালের আগস্ট মাসে বিচার বিভাগ বিচারকদের জন্য একটি আবাসন প্রকল্প আনে। সেখানে জমি কেনার জন্য সে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় সে আমার গলায় হিজাবের পিন ঢুকিয়ে দেয়া, লাথিসহ নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন চালাতে থাকে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্যাতনের বিচার চাই।’

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ময়না তালুকদার, সহযোগী অধ্যাপক ড. চন্দনা রানী বিশ্বাস, সহকারী অধ্যাপক ড. কালীদাস ভক্ত, সহকারী অধ্যাপক ড. প্রমথ মিস্ত্রী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার নেতারাসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী।

ড. চন্দনা রানী বিশ্বাস বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষার্থী যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হবেন, সেটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। তার গলায় এখনও নির্যাতনের ক্ষত রয়েছে। তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তাতে সে মরেও যেতে পারত। এরপর আমাদের এই শিক্ষার্থী যখন বিচারের দাবিতে পুলিশের কাছে গেল তখন তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পায়নি।

‘ঢাবির সাবেক একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গেই পুলিশ যদি এমন আচরণ করে, তাহলে অন্যদের সঙ্গে তারা কেমন আচরণ করে বোঝার বাকি থাকে না।’

অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের উদ্দেশে ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, ‘সে যদি ভাবে একজন বিচারক হওয়ার কারণে তার বিচার হবে না, তাহলে সেটা ভুল। সরকারের সব মহলকে এ ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আহ্বান জানাচ্ছি।’

মানববন্ধনে সংস্কৃত বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘যে জজ নিজের ঘরের নারীদের সম্মান করতে পারে না, সে কীভাবে সমাজের অপরাধীদের বিচার করবে। তাকে সহকারী জজ পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হোক। এমন বিচারক আমাদের সমাজে দরকার নেই।’

পুলিশের অসহযোগিতার বর্ণনা দিয়ে সংস্কৃত বিভাগের সাবেক ছাত্র ফখরুল ইসলাম সিরাজ বলেন, ‘কিছু দিন আগে মামলার অগ্রগতি জানার জন্য ফাতেমা আপুর সাথে শাহবাগ থানায় গিয়েছিলাম। তখন থানার কয়েকজন কর্মকর্তা আমাদের বলেছিলেন, সবকিছু করার ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই; কমিশনার স্যারের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আজকে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সময় একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের ওপর হওয়া নির্যাতনের বিচার দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে দাঁড়িয়েছি, যা দুঃখজনক।’

এ বিভাগের আরো খবর