বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুস্বাস্থ্যে সাইক্লিংয়ে জোর তরুণদের

  •    
  • ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১০:৫৯

এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিঠুন কুমার ঘোষ বলেন, ‘সাইকেলের প্রতি তরুণের আগ্রহ ইতিবাচক দিক। আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেকেই সাইকেল নিয়েই ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসা করে। পরিবেশবান্ধব এ বাহনের ব্যবহার যত বাড়বে, ততই মঙ্গল।’

রাজশাহীর ছেলে ইমরুল। পড়ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছোট বেলা থেকেই তার ঝোঁক ছিল সাইকেলের প্রতি।

এই সাইকেলের কারণেই ক্যাম্পাসের সবার কাছে পরিচিত ইমরুল। সাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়ানো তার শখ।

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সবগুলো উপজেলা সাইকেলে চড়ে ঘুরে দেখেছেন ইমরুল। সম্প্রতি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার তারাখোলা গ্রামে পাহাড়ি পথে সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সফলও হয়েছেন।

সাইকেল নিয়েই ঘুরতে চান বাংলাদেশের সবগুলো জেলা ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে।

ইমরুল জানান, তিনি বেশ কয়েকটি টিউশনিও করান, বাসায় গিয়ে পড়াতে হয়। সেই সঙ্গে দৈনন্দিন যাতায়াতে তিনি সাইকেলেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ছোট্ট এ শহরের চালাচলের জন্য সাইকেল সবচেয়ে উত্তম বাহন।

অনেক সময় দেখা যায়, যাত্রী না পেলে অটোওয়ালা বসে থাকেন যাত্রীর আশায়। এতে অনেক সময় নষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে নিজের মতো করে সাইকেল নিয়ে দ্রুতই গন্তব্যে চলে যাওয়া যায়।

ইমরুল জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বা রাজশাহীর মত শহরে সাইকেল সার্ভিস চালু করা যেতে পারে, শহরের নিদিষ্ট পয়েন্টে সাইকেল রাখা থাকবে, সেখান থেকে সাইকেল নিয়ে, স্বল্প দূরত্বে যাওয়া যাবে, আবার কাজ শেষে আবার আরেক পয়েন্টে রেখে দেয়া যাবে। সবার বাসা থেকে সাইকেল নিয়ে বের হতেই হবে এমনটা নয়।

ইমরুলের মতে মেয়েদেরও সাইকেলে অভ্যস্থ হওয়া উঠিত, এতে তারাও খুব সহজে নিরাপদে সহজে গন্তব্যে যেতে পারবে, কোনো ঝামেলা ছাড়াই।

চট্টগ্রামের পাহাড়ি পথে সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও সফল হন ইমরুল। ছবি: নিউজবাংলা

সম্প্রতি মাউন্টেন সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার প্রসঙ্গে ইমরুল কায়েস বলেন, ‘ছোট থেকেই সাইকেল চালাই, ফেসবুকে রেইস বাংলাদেশ নামে একটা গ্রুপের মাধ্যমে সাইক্লিং প্রতিযোগিতার বিষয়টা জানতে পেরে অংশ নিয়েছিলাম।

‘গত ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ৪৪ কিলোমিটার পাহাড়ি রাস্তায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ফিনিসিং লাইনে পৌঁছায়। ৯৪ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ছিল বেশি, রাজশাহী বিভাগ থেকে মাত্র দুজন অংশ নেই আমরা।

‘পাহাড়ি পথে সাইকেল চালানো কঠিনই ছিলো, তারপরও উপভোগ্য ছিলো, স্থানীয়রা আমাদের পথে পথে হাত নেড়ে উৎসাহ দিয়েছে। আগামীতে এ ধরনের প্রতিযোগিতা, সারাদেশেই আয়োজন হোক এটা প্রত্যাশা।’

বর্তমানে রাস্তায় সাইকেল চালানো নিয়ে কিছুটা আক্ষেপও আছে ইমরুলের।

তিনি বলেন, ‘সাইকেলকে কেউ বাহনই মনে করে না, রাস্তায় ঠিকমত সাইড দিতে চায় না। এ ছাড়া সড়কের আইনকানুন বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার জরুরী। যারা সাইকেল চালান তাদের আরও সচেতন হতে হবে, হাইওয়েতে কিভাবে চালাতে হয়, সে বিষয়েও জানা উচিত।’

শুধু ইমরুল না, অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন সাইকেল চালানোর প্রতি।

বিশেষ করে তরুণ শিক্ষার্থীরা যাতায়াতের বাহন হিসেবে সাইকেলকেই এগিয়ে রাখছেন।

জাকির হোসেন নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘বর্তমান সময়ে মোটরসাইকেল নিয়ে রেসিং করতে দেখা যায় তরুণদের, এটা বেশ ভয়ংকর পর্যায়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। সেখানে সাইক্লিং অনেকটাই নিরাপদ। সাধারণ যাতায়াতের বাহন হিসেবেও ভালো।’

নিয়মিত সাইক্লিং রক্তচাপ, রক্তে শর্করা ও চর্বির মাত্রা কমায়। ছবি: নিউজবাংলা

সাইক্লিং স্বাস্থের জন্য অনেক উপকারী উল্লেখ করে বিএমএ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘সাইকেল চালানো একটি আনন্দদায়ক ও উপকারী ব্যায়াম। নিয়মিত সাইক্লিং রক্তচাপ, রক্তে শর্করা ও চর্বির মাত্রা কমায়। হৃদরোগের ঝুঁকিও কমায়।

‘এ ছাড়া ওজন কমানো, পেশি সবল করে। ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতাও বাড়ায়। মন ফুরফুরে থাকায় মানসিক চাপ কমে।’

এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিঠুন কুমার ঘোষ বলেন, ‘সাইকেলের প্রতি তরুণের আগ্রহ ইতিবাচক দিক। আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেকেই সাইকেল নিয়েই ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসা করে। পরিবেশবান্ধব এ বাহনের ব্যবহার যত বাড়ানো যাবে, ততই মঙ্গল।

‘পৃথিবীর অনেক শহরে পৃথক সাইকেল লেন আছে। আমাদের দেশেও আলাদা সাইকেল লেন করা যেতে পারে, যাতে সবাই নিরাপদে সাইকেল চালাতে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর