মাদারীপুরের কালকিনিতে কৃষক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িসহ ১৮টি বসতঘর ও একটি ইটভাটায় আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা।
আলীনগর ইউনিয়নে মঙ্গলবার রাত ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আগুন দেয় বিক্ষুব্ধরা। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এতে অন্তত ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক ধারণা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আসফাক রাসেল জানান, কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আলিনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান মিলন সরদারের বসতঘরে লুটপাট শেষে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধরা।
পরে তার সমর্থিত পাশের আরও বেশ কয়েকটি বসতঘর ও একটি ইউভাটায় পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। খবর পেয়ে মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ও বরিশালের গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ৪ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওসি বলেন, ‘মানিক সরদার হত্যার জেরেই এই আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ব্যাপারে মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ জানান, প্রাথমিকভাবে ছোট-বড় মিলে ১৮টি ঘরে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধরা। এসব ঘরের মধ্যে দোতলা একটি ভবন, তিনটি এক তলা ভবন ও অন্যগুলো টিনশেডের। এতে মোটামুটি দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এর আগে সোমবার রাত ৮টার দিকে ইউনিয়নের পালরদী নদীর পারে কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে দুর্বৃত্তরা।
রাত ১০টার দিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে আনলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
৩৮ বছর বয়সী নিহত মানিক সরদার জেলার কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের কালীনগর গ্রামের আলমগীর সরদারের ছেলে। উপজেলা কৃষক লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সহসভাপতি ছিলেন তিনি।
গেল দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মানিক সরদার আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাহীদ পারভেজের পক্ষে কাজ করেছেন। তখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাফিজুর রহমান মিলন সরদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান।
তাই এ হত্যার পেছনে মিলন সরদারের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে নিহতের পরিবারের দাবি। এ ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
তবে এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন ওসি।